টানা লকডাউন আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জেরে চুলের জন্য পার্লার যাওয়ার ব্যাপারটা প্রায় উঠেই গেছে! যা কিছু যত্ন, সেটা নিজেদেরই করে নিতে হয়। চুলের পেছনে নিয়মিত সময় দেওয়াটা এমনিতেই ক্লান্তিকর, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে লকডাউনের সুবাদে বাড়তি মানসিক চাপ, যার প্রভাব চুলের ওপরেও পড়ে। তবে জেনে রাখুন, চুলের হাল খারাপ হওয়ার পেছনে শুধু এই কারণগুলোই একমাত্র কারণ নয়। চুল শুকনো, ক্ষতিগ্রস্ত, ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার জন্য আরও নানা কারণ দায়ী হতে পারে।
আমরা না জেনে এমন অনেক ভুল করি, বা আমাদের এমন অনেক অভ্যাস থাকে যা আখেরে চুল শুকনো আর ভঙ্গুর করে দেয়। এই লেখায় আমরা সেই সব বিষয় নিয়েই আলোচনা করব, যাতে আপনারা চুলের আরও ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আগেই ভুল শুধরে নিতে পারেন আর লকডাউনে চুলের যত্নও নিতে পারেন। পড়তে থাকুন।
- 01. খুব টাইট হেয়ারস্টাইল করা
- 02. নিয়মিত শ্যাম্পু না করা
- 03. অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
- 04. ডগা ফাটা চুল, ভঙ্গুর চুলের প্রতি গুরুত্ব না দেওয়া
- 05. ক্লান্তি জমিয়ে রাখা
01. খুব টাইট হেয়ারস্টাইল করা

খুব টাইট করে চুল বাঁধলে তার সম্পূর্ণ চাপটা গিয়ে পড়ে চুলের গোড়ায় এবং তার ফলে চুলের গোড়ার ভীষণ ক্ষতি হতে পারে। টানটান করে বাঁধা খোঁপা, অগোছালো করে টেনে বাঁধা পনিটেল বা এলোমেলো টপ নট করার সময় চুলের গোড়ায় টান পড়ে চুল দুর্বল হয়ে যায়, ঝরেও যায় সহজেই। তাই এমনভাবে চুল বাঁধুন যাতে চুল সুরক্ষিত থাকে। বিনুনি অথবা আলগা খোঁপায় চুল বেঁধে রাখলে গোড়ায় টান পড়বে না। স্ক্যাল্প যাতে নিশ্বাস নিতে পারে, তার জন্য দিনের মধ্যে কয়েক ঘণ্টা চুল খুলেও রাখতে পারেন।
02. নিয়মিত শ্যাম্পু না করা

দিনের পর দিন চুলে শ্যাম্পু না করলে মাথায় তেলময়লা, ঘাম জমে গিয়ে চুলের ফলিকলগুলোর মুখ বন্ধ করে দেয়, ফলে চুলের স্বাভাবিক বাড়বৃদ্ধির গতি ব্যাহত হয়। চুলে বিশ্রী গন্ধও হয়, মাথা চুলকোতে থাকে। এই পরিস্থিতি এড়াতে চুলের ধরনের ওপর নির্ভর করে সপ্তাহে অন্তত 2-3 বার শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। বাড়িতে থাকলেও নিয়মিত চুল ধুতেই হবে।
বিবি-র পছন্দ: ট্রেসমে বোটানিক ডিটক্স অ্যান্ড রেস্টোর শ্যাম্পু অ্যান্ড কন্ডিশনার/ Tresemme Botanique Detox and Restore Shampoo and Conditioner
03. অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া

যাঁরা রান্নাবান্না করতে ভালোবাসেন না, তাঁরা অনেকসময়ই এমন খাবার খেয়ে থাকেন যাতে চুলের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন বা মিনারেল থাকে না। ফলে হঠাৎ করেই প্রচুর চুল উঠতে শুরু করে। প্রোটিন না খেলে চুল ক্ষতিগ্রস্ত তো হয়ই, এমনকী শরীরেরও ফলিকল থেকে নতুন চুল তৈরি করার ক্ষমতা কমে যায়। তাই রোজকার খাবারে রাখুন ডিম, পালং শাক, তেলওয়ালা মাছ, সিডস, অ্যাভোকাডো, বাদাম আর বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট। বাড়িতে থাকলেও চুলের স্বাস্থ্য উপছে পড়বে।
04. ডগা ফাটা চুল, ভঙ্গুর চুলের প্রতি গুরুত্ব না দেওয়া

নিয়মিত না ছাঁটলে চুল নাকি আর বাড়ে না! এমন একটা ধারণা অনেকেরই রয়েছে। আসলে চুল নিয়মিত না ছাঁটলে চুলের প্রান্তভাগ ফেটে যায়, চু্ল খুব শুকনোও হয়ে যায়। আর লকডাউনে থাকা মানে চুল কাটতে যাওয়ার প্রশ্নই নেই! ফলে চুল উঠতে থাকে হু হু করে! চুলের ডগা ফাটা এড়াতে সপ্তাহে একদিন ডিপ কন্ডিশন করাবেন। ডিপ কন্ডিশনারে একাধিক শক্তিশালী উপাদান থাকে যা ক্ষতিগ্রস্ত চুলে নতুন প্রাণ সঞ্চার করতে পারে। আর আপনার হাত যদি ঠিক থাকে, তা হলে বাড়িতেও চুল ছেঁটে নিতে পারেন।
বিবি-র পছন্দ: ডাভ ইনটেন্স ড্যামেজ রিপেয়ার হেয়ার মাস্ক /Dove Intense Damage Repair Hair Mask
05. ক্লান্তি জমিয়ে রাখা

দীর্ঘ একটানা কাজ, মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, সব মিলিয়ে আপনার চুলের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই পর্যায়ে চুলের ফলিকলগুলোর বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়, চুলও উঠে যায় খুব তাড়াতাড়ি। আসলে স্ট্রেস বেশি হলে শরীরে কর্টিসল বেশি তৈরি হয় এবং কর্টিসল বেশি তৈরি হলেই চুল উঠতে শুরু করে। তাই দৈনন্দিন রুটিন থেকে স্ট্রেস কমাতেই হবে। যোগব্যায়াম করুন, মেডিটেট করুন নিয়ম করে আর রাতে 7-8 ঘণ্টা ঘুমোন। খুব শিগগিরই ফিরে পাবেন মাথা ভরা ঝলমলে মসৃণ চুল।
Written by Manisha Dasgupta on Jul 19, 2021