চুলের নানা সমস্যার মধ্যে একটা বড় সমস্যা হল খুসকি। সারা পৃথিবীর অসংখ্য মানুষ এ সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু তার মানে তো এই নয় যে, আপনি খুসকিকে জীবনের অঙ্গ হিসেবে মেনে নেবেন! চুল উঠে যাওয়া, ব্রণ, এমনকী, পাতলা চুলের জন্য আপনার জিন দায়ী হতে পারে, কিন্তু খুসকিকে মোটেই এই তালিকায় ফেলা যায় না। চুলের ফাঁকে বা পোশাকের উপর যে গুঁড়ো গুঁড়ো সাদা জিনিসটা লেগে থাকে আর আপনার অস্বস্তির কারণ হয়, তার জন্য দায়ী একমাত্র আপনি। কারণ খুসকি হয় চুলের যথাযথ যত্নের অভাবে আর জীবনশৈলীগত বদ অভ্যেসের জন্য!

তবে সুখের কথা হল, খুসকি কিন্তু কমানো সম্ভব! আপনার যদি দীর্ঘদিন ধরে খুসকির সমস্যা থেকে থাকে, তা হলে বেশ কিছু ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে আপনাকে। নিচে আমরা একটা তালিকা দিলাম যা আপনার খুসকির সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে খুসকি নির্মূল করতে চাইলে এড়িয়ে চলতেই হবে এ সব অভ্যেস।

 

ঘন ঘন শ্যাম্পু করা

ঘন ঘন শ্যাম্পু করা

মাথায় খুসকি হলে প্রথমেই মনে হয় শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলি! কিন্তু তা করা কখনওই উচিত নয়। সত্যি বলতে চুলের সঠিক যত্ন করতে হলে এ অভ্যাস বর্জন করতেই হবে! প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে আপনার চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যায়। এই প্রাকৃতিক তেলই কিন্তু আপনার স্ক্যাল্পে পুষ্টি জুগিয়ে চুল তরতাজা রাখতে সাহায্য করে! কাজেই মাথায় প্রাকৃতিক তেলের জোগান কম হলে আপনার স্ক্যাল্প আরও শুকনো হয়ে যাবে, খুসকির সমস্যাও আরও বাড়বে।

 

সঠিক শ্যাম্পু ব্যবহার না করা

সঠিক শ্যাম্পু ব্যবহার না করা

দোকান থেকে যে কোনও অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু কিনে নিলেই কিন্তু আপনার সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে না! যেটা বোঝা দরকার, সব খুসকি কিন্তু একই ধরনের হয় না! সবচেয়ে বেশি দেখা যায় 'শুকনো' খুসকি। আপনার চুলের গায়ে বা কাঁধে যে সাদা সাদা খুসকি ঝরে পড়ে, তা হল শুকনো খুসকি। ক্লিয়ার অ্যান্টি ড্যানড্রাফ নারিশিং শ্যাম্পু-কমপ্লিট অ্যাক্টিভ কেয়ার / -এর মতো শ্যাম্পু ব্যবহার করে এই খুসকি নির্মূল করা যায়, এতে স্ক্যাল্পও পুষ্টি পায় আর ভালো থাকে। অন্যদিকে তেলতেলে খুসকি আপনার মাথায় এঁটে বসে থাকে। এই খুসকি তাড়াতে হলে আপনার দরকার ক্লিনিক প্লাস স্ট্রং স্ক্যাল্প অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু /।

 

অতিরিক্ত স্টাইলিং প্রডাক্ট ব্যবহার

অতিরিক্ত স্টাইলিং প্রডাক্ট ব্যবহার

হেয়ারস্প্রে, জেল, ওয়াক্স সহ নানা ধরনের স্টাইলিং প্রডাক্টের ব্যবহারে আপনার চুল ফিটফাট থাকে ঠিকই, কিন্তু এ সব প্রডাক্টে চড়া মাত্রায় অ্যালকোহল থাকে যা স্ক্যাল্পকে শুকনো করে দেয়। স্ক্যাল্প যত শুষ্ক হয়ে যায়, স্বাভাবিকভাবেই খুসকির পরিমাণও ততই বাড়ে।

 

জোরে জোরে মাথা ঘষা

জোরে জোরে মাথা ঘষা

যাঁদের খুসকির ধাত থাকে, শ্যাম্পু করার সময় তাঁরা খুব জোরে জোরে স্ক্যাল্পে মাসাজ করেন যাতে সব খুসকি উঠে যায়! কিন্তু এতে আখেরে স্ক্যাল্পের কোমল ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর খুসকির সমস্যাও বেড়ে যায়। তাই শ্যাম্পু করার সময় জোরে না ঘষে আঙুলের ডগা দিয়ে কোমলভাবে ধীরে ধীরে স্ক্যাল্প মাসাজ করুন, তাতে সবচেয়ে ভালো ফল পাবেন।

 

খাওয়াদাওয়া আর জীবনশৈলীর অনিয়ম

খাওয়াদাওয়া আর জীবনশৈলীর অনিয়ম

খাবারদাবারের তালিকায় যদি যথেষ্ট পুষ্টি না থাকে, যদি প্রক্রিয়াজাত (প্রসেসড) খাবার, পরিশোধিত চিনি আর জাঙ্ক ফুড খেয়েই দিন কাটিয়ে দেন, তা হলে শরীরে প্রদাহ তৈরি হবে এবং অবধারিতভাবে মাথায় খুসকি দেখা দেবে। এ সব খাবার বাদ দিন, দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় নিয়ে আসুন টাটকা সবুজ শাকসবজি আর ফল, সঙ্গে থাক ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরা খাবার। তাতে আপনার স্ক্যাল্প আর চুল দুইই সুস্থ থাকবে, ধারেপাশে ঘেঁষবে না খুসকি।