খুসকির হামলা যে কোনও মেয়ের পক্ষেই দুঃস্বপ্নের মতো! আর হবে না-ই বা কেন! সেজেগুজে একটা গাঢ় রঙের পোশাক পরে বেরোনোর উপায় নেই, কিছুক্ষণের মধ্যেই কাঁধের ওপর সাদা সাদা খুসকির আঁশ ঝরে পড়তে শুরু করে। এরকম পরিস্থিতিতে পড়তে কে-ই বা চায় বলুন?
প্রশ্ন হল খুসকি হয় কেন? সাধারণত তেলতেলে স্ক্যাল্পই খুসকির অন্যতম কারণ। মাথার তেলতেলেভাবের সঙ্গে যুক্ত হয় মালাসেজিয়া নামে একধরনের ইস্ট। এই ইস্টও থাকে আপনার মাথায়। আর এই দুইয়ে মিলেই তৈরি হয় বিচ্ছিরি খুসকি। আবার শুধু তেলতেলে নয়, শুষ্ক স্ক্যাল্পেও খুসকি হতে পারে। শুষ্কতা, স্পর্শকাতর ত্বক আর ভুল হেয়ার কেয়ার প্রডাক্টের ব্যবহার থেকেও হঠাৎ করে খুসকি বেড়ে যেতে পারে।
খুসকির সমস্যা যদি আপনাকেও ভোগায়, তা হলে একদম ঠিক লেখাটাই পড়তে শুরু করেছেন আপনি। কারণ আমরা নিয়ে এসেছি চুল পরিচর্যার এমন একটি রুটিন যা শুধুমাত্র আপনার জন্যই তৈরি। ঠিকঠাক মেনে চলুন আর ফল পান হাতেনাতে!
- ধাপ 1: রাতভর যত্ন
- ধাপ 2: শ্যাম্পু
- ধাপ 3: কন্ডিশনার
- ধাপ 4: সপ্তাহে একবার ডিপ কন্ডিশনিং
- ধাপ 5: দৈনন্দিন সুরক্ষা
ধাপ 1: রাতভর যত্ন

দিনের সমস্ত ক্ষতি পুষিয়ে তরতাজা হয়ে উঠতে রাতের বেলা ত্বকের যেমন বাড়তি যত্ন দরকার হয়, তেমনি চুলের বেলাতেও একই কথা প্রযোজ্য। রাতে চুলেরও দরকার উন্নত পরিচর্যা। যদি আপনার মূল সমস্যা খুসকি হয়, তা হলে চুলের পরিচর্যার প্রথম ধাপ হল তেল মাখা। টি ট্রি, জোজোবা বা এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেলের মতো এসেনশিয়াল অয়েল মাখুন চুলে। তাতে খুসকি যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তেমনি মাথার চুলকানিও কমবে আর চুল পাবে প্রয়োজনীয় পুষ্টি। শ্যাম্পু করার আগের রাতে চুলে ভালোভাবে তেল মেখে নিন। তেল সারা রাত রেখে দেবেন যেন তা স্ক্যাল্পে আর চুলে শুষে যেতে পারে। ব্যবহার করুন ক্লিয়ার অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ নারিশিং হেয়ার অয়েল অ্যাকটিভ কেয়ার/ Clear Anti-Dandruff Nourishing Hair Oil Active Care , এই তেলটি হালকা, চটচটে নয় এবং কার্যকরীভাবে খুসকির মোকাবিলা করতে সক্ষম। পাশাপাশি চুল আর স্ক্যাল্পে পুষ্টিও জোগায় এই তেলটি। আর একটা ভালো ব্যাপার হল, শ্যাম্পু করার আগে আর পরে, দু' ক্ষেত্রেই এই তেলটি মাখতে পারবেন আপনি।
ধাপ 2: শ্যাম্পু

খুসকি কমানোর একমাত্র উপায় স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখা। আপনার যদি খুসকির ধাত হয়, তা হলে ধুলোবালি লেগে, দূষণ এবং আরও নানা কারণে মাথা চুলকোতে পারে। ফলে অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ উপাদানযুক্ত শ্যাম্পু দিয়ে সপ্তাহে অন্তত তিনবার চুল ধুয়ে ফেললে উপকার পাবেন। ব্যবহার করে দেখুন পিওর ডার্ম ড্যানড্রাফ প্রোটেক্ট শ্যাম্পু/ Pure Derm Dandruff Protect Shampoo, এটি মাথার তালু আর রোমছিদ্রগুলো পরিষ্কার রাখে এবং তেলময়লা সাফ করে দেয়। পাশাপাশি চুল পুষ্টি পায়, হয়ে ওঠে নরম আর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। চুল বশে রাখাও সহজ হয়।
ধাপ 3: কন্ডিশনার

কন্ডিশনার ছাড়া আপনার চুল ধোয়া অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কন্ডিশনার না লাগালে চুলের আর্দ্রতার আস্তরণ নষ্ট হয়ে যায়, চুল রুক্ষ আর নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। তাই শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার লাগান। চুলের মাঝামাঝি অংশ থেকে শেষভাগ পর্যন্ত কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। কয়েক মিনিট রাখুন, তারপর হালকা গরম জলে ধুয়ে নিন।
ধাপ 4: সপ্তাহে একবার ডিপ কন্ডিশনিং

বাড়তি তেল বা অতিরিক্ত শুষ্কতা, দু'টি কারণেই চুলে খুসকি হতে পারে। শুষ্কতার কারণে মাথায় সাদা সাদা আঁশের মতো দেখা দেয়, যা আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। খুসকির সমস্যা দূর করতে স্ক্যাল্পের চাই পুষ্টি। সপ্তাহে একবার ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট করুন। টোনিঅ্যান্ডগাই নারিশ রিকনস্ট্রাকশন মাস্ক/ Toni&Guy Nourish Reconstruction Mask ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহার করলে চুল নেতিয়ে থাকে না, বরং হয়ে ওঠে নরম, মসৃণ আর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
ধাপ 5: দৈনন্দিন সুরক্ষা

খুসকি কমানো সহজ নয়, আর তা রাতারাতি কমে যাবে এমন আশা করাও উচিত নয়। রোদ, ধুলো, দূষণ প্রতিদিন আমাদের চুলের ক্ষতি করে তাই পরিবেশগত এ সব সমস্যা থেকে চুল রক্ষা করা খুব দরকার। দূষণে চুলের যাতে ক্ষতি না হয়, তার জন্য সারা বছর স্কার্ফ দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। রোজ একভাবে ঢাকবেন না। খুঁজে বের করুন নতুন নতুন উপায় আর চুল সুরক্ষিত রাখুন পরিবেশগত সমস্যার হামলা থেকে!
Written by Manisha Dasgupta on Apr 01, 2021
Author at BeBeautiful.