বছর ঘুরতে না ঘুরতে ফের গত অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি। ফের লকডাউন, ফের ঘরবন্দি জীবন কাটানো। আর এই সময়টাতে নিজের যত্ন নেওয়া সবচেয়ে বেশি জরুরি। অন্যকে সাহায্য করার ফাঁকে নিজের খেয়ালও রাখতে হবে। কারণ নিজের যত্ন নিতে হলে যে সব পদক্ষেপ করতে হয়, তাতে আপনার শারীরিক, মানসিক ও আবেগসংক্রান্ত স্বাস্থ্য সতেজ আর সুস্থ থাকে। সারাক্ষণ নানাধরনের মিডিয়ায় একের পর এক খবরের জোয়ারে নিজেকে ব্যতিব্যস্ত মনে হচ্ছে? খবর থেকে সরিয়ে আনুন নিজেকে, সেই সময়টা নিজের জন্য খরচ করুন।
নিজের যত্ন অর্থাৎ সেলফ-কেয়ার করলে একদিকে যেমন মন ভালো থাকবে, তেমনি আপনার কর্মদক্ষতাও বাড়বে। রইল নিজের যত্ন নেওয়ার পাঁচটি সাধারণ উপায়। এই পাঁচটি নিয়ম মেনে চলতে মোটেও বেশি সময় দিতে হবে না, কিন্তু অনেক তরতাজা প্রাণোচ্ছ্বল লাগবে নিজেকে।
01. ঘুমকে গুরুত্ব দিন

ঘুমোতে যাওয়ার সময় বিছানায় শুয়ে শুয়ে খবর আর ইনস্টাগ্রামের ফিড দেখলে ঘুমের প্যাটার্ন আর গুণমান, দুইই ব্যাহত হয়। সব খবর সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা জরুরি সন্দেহ নেই, কিন্তু সারাদিন ধরে খবরের মধ্যে ডুবে থাকবেন না, বরং খবর দেখা বা পড়ার সময় বেঁধে দিন। টিভি বা সোশাল মিডিয়ার স্ক্রিনটাইমও কমিয়ে আনুন। ঘুমোতে যাওয়ার আগে অন্তত ঘণ্টাখানেক নিজেকে গ্যাজেট থেকে দূরে রাখুন। নিয়মিত মেডিটেশন বা ধ্যানের অভ্যেস করলে ঘুম তাড়াতাড়ি আসবে, ভালো ঘুমও হবে।
02. ব্যায়াম করুন

কোনও শারীরিক কসরত না করে স্রেফ ঘরে বসে থাকাটা শরীর আর মনের পক্ষে স্বাস্থ্যকর নয়। ব্যায়াম করলে এনডরফিন (মন ভালো করার হরমোন) ক্ষরণ হয় এবং আপনার শরীর ভালো থাকে। এর ফলে যে কোনও ধরনের ক্রনিক বা গুরুতর রোগের আশঙ্কাও কমে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যায়াম করার দরকার নেই। দিনে মাত্র 20-30 মিনিটের ব্যায়ামই যথেষ্ট, তাতেই এনার্জি পাবেন দিনভর, মনমেজাজও ভালো থাকবে।
03. ত্বকের যত্ন নিন

অনেক মেয়ের কাছেই নিজের যত্ন নেওয়ার অপর নাম হল ত্বকের দেখভাল করা। ঘরোয়া ফেসিয়াল করলে বা মুখে শিট মাস্ক চাপিয়ে শুয়ে থাকলে যদি আপনার মন ভালো লাগে, তবে তাই করুন। এতে মোটেও সময় বেশি লাগে না, বরং নিমেষে মন ভালো হয়ে যায়। দীর্ঘ স্নান, সেই সঙ্গে বডি স্ক্রাব আর এসেনশিয়াল অয়েলের বিলাসিতা করতে ইচ্ছে করলে সেটাই করুন। মোদ্দা কথা হল এমন সব কিছুই করুন যা আপনাকে শান্তি দেয়, হালকা থাকতে সাহায্য করে।
04. গান শুনুন

টিভি দেখবেন না, বরং মন ভালো করে দেওয়া গান শুনুন। মনে উদ্বেগ বা বিষণ্ণতা থাকলে তা কেটে যাবে, আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। যে সব গান শুনলে আপনার মন ভালো থাকে, ভালো স্মৃতি মনে পড়ে, সে সব গান শুনতে পারেন। সহজ করে বললে এমন গান শুনুন যা সমস্ত অশান্তি, নেগেটিভ ব্যাপার থেকে আপনার মনকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।
05. ঘর গুছিয়ে ফেলুন

ঘরে আবর্জনা জমে থাকলে তা থেকে স্ট্রেস আর উদ্বেগ তৈরি হতে পারে। আপনার ঘর যদি এলোমেলো, অগোছালো হয়, তবে তা থেকে মনের ওপর চাপ পড়তে পারে। এর ফলে আপনার ঘুমের প্যাটার্ন গোলমাল হয়ে গিয়ে কর্টিসলের মাত্রা (স্ট্রেস হরমোন) বেড়ে যায়। বাড়ির যে কোনও একটা ঘর বেছে নিন গোছানোর জন্য। যে সব জিনিস আপনার লাগবে না, তা ফেলে দিন। বাকি জিনিসপত্র সুন্দর করে গুছিয়ে রাখুন। এতে মন যেমন ভালো থাকবে, তেমনি কাজ করার আনন্দও পাবেন।
Written by Manisha Dasgupta on May 31, 2021
Author at BeBeautiful.