চুলে রং করার মধ্যে একটা দারুণ মজার ব্যাপার আছে, মানতেই হবে! চুলের ভোল রাতারাতি বদলে ফেলা আর সেই সঙ্গে একটা ছোটখাটো মেকওভার সেরে ফেলার সবচেয়ে সহজ উপায় হল চুলটা রং করে নেওয়া। অফিসের কাজ, হাজারটা মিটিং আর ঘরের কাজ মিটিয়ে পার্লারে গিয়ে পেশাদারের কাছে চুল রং করানোটা অবশ্য অনেকের কাছেই কঠিন ঠেকতে পারে। তাঁদের জানাই, যখন বাড়িতেই চুল রং করে ফেলার সহজ উপায় আছে, তখন বাইরে যেতে যাবেনই বা কেন? বাড়িতে বসে চুল রং করার কথা শুনলে মনে হতেই পারে কাজটা খুব কঠিন।
সে জন্যই আমরা নিয়ে এসেছি একটি স্টেপ-বাই-স্টেপ গাইড, যা আপনাকে শিখিয়ে দেবে ঘরে বসে সহজেই চুল রং করার কৌশল। এতে একদিকে যেমন টাকা বাঁচবে, তেমনি বাড়ির আরাম ছেড়ে বাইরে পা বাড়াতেও হবে না! তাই শিখে নিন উপায় আর সুন্দর করে চুল রাঙিয়ে নিন ঘরে বসেই!
- ধাপ#1: চুলে শ্যাম্পু করে নিন একদিন আগে
- ধাপ#2: বেছে নিন পছন্দের রং আর সরঞ্জাম
- ধাপ#3: চুল প্রি-লাইটেন করে নিন
- ধাপ#4: এবার রং করার পালা
- ধাপ #5: চুল ধুয়ে শুকিয়ে নিন
ধাপ#1: চুলে শ্যাম্পু করে নিন একদিন আগে

যেদিন চুল রং করবেন, তার এক বা দু'দিন আগে চুল অবশ্যই শ্যাম্পু করে নেবেন। তাতে একদিকে চুল পরিষ্কার থাকবে, অন্যদিকে শ্যাম্পুর কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়া চুলের প্রাকৃতিক তেলের আস্তরণও ফিরে আসে। স্ক্যাল্পে তেল জমে থাকলে রঙের কারণে প্রদাহ হয় না, রংও চুলের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মিশে যায়। তাতে রং চুলে অনেক বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়।
ধাপ#2: বেছে নিন পছন্দের রং আর সরঞ্জাম

রং বাছাই করার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না, সময় নিন। চুল হাইলাইট করুন বা পুরো রং করুন, সবসময় উন্নত গুণমানের হেয়ার কালার বেছে নেবেন। রং করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সব হাতের কাছে গুছিয়ে রাখুন। আপনার লাগবে তোয়ালে, গ্লাভস, রং মেশানোর বাটি, মোটা দাঁড়ার চিরুনি, প্লাস্টিকের ক্লিপ, রং লাগানোর ব্রাশ, সিলভার ফয়েল পেপার আর অবশ্যই, হেয়ার কালার। বিশেষজ্ঞের টিপস: বাড়িতে চুল রং করার সময় হাতের কাছে রাখুন ময়শ্চারাইজার বা ভেসলিন পেট্রোলিয়াম জেলি। কপালে হেয়ারলাইন বরাবর, কানের চারপাশে আর ঘাড়ে মোটা করে মেখে নিন, যাতে ত্বকে রং লেগে না যায়।
ধাপ#3: চুল প্রি-লাইটেন করে নিন

স্বাভাবিক চুলের ওপরে হেয়ার কালারের রং ধরে না। তাই হেয়ার কালারের রং বোঝার জন্য আগে থেকে চুলের স্বাভাবিক রং একটু হালকা করে নিতে হয়। তাই কালারিং শুরু করার আগে প্রস্তুতি দরকার। বেশিরভাগ হেয়ার কালারের সঙ্গেই ব্লন্ডার পাউডার আর ডেভেলপার থাকে, যা চুলের রং হালকা করতে সাহায্য করে। কিন্তু আপনার কালার বক্সে যদি তা না থাকে, তা হলে আলাদা করে কিনতে হবে। এ সব জিনিস দোকানে সহজেই পেয়ে যাবেন। দুটি জিনিস ভালো করে মিশিয়ে চুলের যে অংশ রং করতে চান সেখানে লাগান। তারপর রং করা চুলের গোছা সিলভার ফয়েলে জড়িয়ে রাখুন। আধঘণ্টা থেকে 45 মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর চুল ধুয়ে ভালো করে শুকিয়ে নিন। বিশেষজ্ঞের টিপস: চুল রং করার অন্তত 24 ঘণ্টা আগে কালার মিক্সের টেস্ট করে নেওয়া উচিত। রঙের রাসায়নিক থেকে ত্বকে কোনও অ্যালার্জি বেরোচ্ছে কিনা সেটা বোঝার যথেষ্ট সময় পাবেন।
ধাপ#4: এবার রং করার পালা

চুল শুকিয়ে গেলে কালার করার পালা। চুল ভালো করে আঁচড়ে নিন যেন জট না থাকে। এবার কালার মিক্স তৈরি করে নিন (বক্সে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাবেন), প্রি-লাইটেনড চুলের গোছায় অ্যাপ্লিকেটর ব্রাশ দিয়ে হেয়ার কালার লাগান। চুল বেশ কয়েকটা ভাগে ভাগ করে নিয়ে রং লাগানোই ভালো। তাতে রং সমানভাবে ও ভালোভাবে লাগানো যায়। প্রতিটি ভাগ রং লাগানো হয়ে গেলে সিলভার ফয়েলে জড়িয়ে নিন। তারপর আরও 30-45 অপেক্ষা করুন।
ধাপ #5: চুল ধুয়ে শুকিয়ে নিন

চুল কালার করা হয়ে গেলে ধুয়ে নিয়ে আর একবার শ্যাম্পু করুন। এবার ট্রেসমে প্রো প্রোটেক্ট সালফার ফ্রি শ্যাম্পু/ TRESemmé Pro Protect Sulphate Free Shampoo -র মতো কালার প্রোটেক্টিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন, তারপর ট্রেসমে প্রো প্রোটেক্ট সালফেট ফ্রি কন্ডিশনার/ TRESemmé Pro Protect Sulphate Free Conditioner লাগান। শ্যাম্পু আর কন্ডিশনারের এই জুটি সালফেট (এটি হেয়ার কালার নষ্ট করে দেয়) আর প্যারাবেন মুক্ত এবং এতে মরোক্কান আর্গান অয়েলের পুষ্টি রয়েছে যা চুলের রং চট করে ফিকে হতে দেয় না আর চুল রাখে পরিষ্কার ও আর্দ্র। অন্যদিকে কন্ডিশনার চুলের ওপরে একটি সুরক্ষার আস্তরণ তৈরি করে ময়শ্চার ধরে রাখে আর আপনি পেয়ে যান মসৃণ, ঝলমলে, জটমুক্ত চুল।
চুল ধোয়ার সময় রং গলে বেরিয়ে যেতে দেখবেন, কিন্তু তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই; এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। চুল রং করার পর প্রথম কয়েকবার এমন হতে পারে।
চুল ধোয়া হয়ে গেলে খোলা হাওয়ায় শুকিয়ে নিন অথবা ব্লো ড্রাই করুন। চুলে সুন্দর রং হয়ে যাওয়ার কথা। হয়তো একটু পরিশ্রম হবে, কিন্তু নিজের হাতে চুল রং করতে পারবেন আর পয়সাও বাঁচবে! সেটাই বা কম কিসের, তাই না!
Written by Manisha Dasgupta on Sep 02, 2021
Author at BeBeautiful.