ত্বকের ঠিকঠাক যত্ন নেওয়া কি কম ঝকমারির কাজ! প্রতিদিন নিত্যনতুন প্রডাক্টের আগমন, দিনে দিনে বাড়তে থাকা জরুরি স্কিনকেয়ার উপাদানের তালিকা আর তার সঙ্গে ইনস্টাগ্রামের স্কিনকেয়ার ট্রেন্ড তো রয়েইছে! এত ভিড়ের মধ্যে থেকে বুঝবেন কীভাবে কোনটা সত্যিই আপনার ত্বকের জন্য জরুরি আর কোনটা নয়?
আমাদের ঝুলিতে রূপচর্চা সংক্রান্ত যত অভিজ্ঞতা রয়েছে তার উপর যদি ভরসা রাখেন, তা হলে বলব প্রতিটি মেয়ের দৈনন্দিন ত্বকচর্চার রুটিনে সিরাম থাকা চাইই চাই! আপনার বয়স যাই হোক না কেন, আপনার রোজকার ত্বক পরিচর্যায় যদি সিরাম না থেকে থাকে, তা হলে দারুণ ভুল করছেন। প্রতিটি ত্বকের উপযোগী সিরাম রয়েছে, আর একটু খুঁজে দেখলেই আপনি সেই সিরামটি পেয়ে যাবেন যা আপনার ত্বকের বিশেষ সমস্যাগুলো সহজেই মিটিয়ে দিতে পারবে।

সিরাম সত্যিই কাজ করে
সিরামের সবচেয়ে বড় উপকারিতাটা হল, সিরাম সত্যি সত্যিই ত্বকের গভীরে গিয়ে কাজ করে। সিরামে একাধিক সক্রিয় (অ্যাকটিভ) উপাদান অনেক বেশি পরিমাণে থাকে, তা সত্ত্বেও আপনি প্রেসক্রিপশন ছাড়াই তা কিনতে পারেন। সাধারণত ক্লেনজার আর ময়শ্চারাইজারে 5 থেকে 10% সক্রিয় উপাদান থাকে, সে জায়গায় সিরামে থাকে প্রায় 70% পর্যন্ত। এর মানে হল, সিরামের ছোট্ট শিশিটার গায়ে যে সব উপকারিতার কথা লেখা থাকে আপনার ত্বকেও সত্যিই তার প্রতিফলন আপনি দেখতে পান। ত্বকের রং সমান করা, সূক্ষ্ম রেখা কমানো, ত্বক উজ্জ্বল করা বা টানটান করা, কালো দাগছপ কমানো, এক কথায় আপনার চাহিদা যাই হোক না কেন, সিরামেই লুকিয়ে রয়েছে আপনার মুশকিল আসান!
সিরামে কোনও ফিলার নেই
আপনার ত্বক যদি সেনসিটিভ হয় বা ব্রণর সমস্যা থাকে, তা হলে মিনারেল অয়েলের মতো উপাদানের থেকে আপনি সাত হাত দূরে থাকতে চাইবেন, এটাই তো স্বাভাবিক! সিরামের বিশেষত্ব হল, এটি ত্বকের গভীরে সবটুকু উপকারিতা পৌঁছে দেয় এবং এতে ত্বকের পক্ষে রুক্ষ বা প্রদাহ সৃষ্টিকারী কোনও উপাদান থাকে না। সিরামের পেপটাইড, স্টেম সেল, ভিটামিন ও অন্যান্য উপকারী মিনারেলের মতো অ্যাকটিভ উপাদানগুলো ত্বকের উপরিভাগের স্তর অতিক্রম করে গভীরে পৌঁছে যায়, ফলে ত্বক একদম ভিতর থেকে পুষ্টি পেয়ে সতেজ হয়ে ওঠে।

ব্রণর সংখ্যা কমে আসে
যাঁদের কথায় কথায় ব্রণ বেরোয়, এবার হাঁফ ছাড়তে পারেন! সাধারণ ময়শ্চারাইজার ত্বকের উপরে একটা আস্তরণ ফেলে দেয় যা রোমছিদ্রের মুখ বন্ধ করে ব্রণর সমস্যা আরও জটিল করে তুলতে পারে। কিন্তু সিরাম অয়েল-বেসড নয়, বরং ওয়াটার-বেসড। একদম হালকা আর জলের মতো হওয়ার সুবাদে এটি ত্বকে খুব তাড়াতাড়ি শুষে যায় এবং কোনওরকম ব্রণ বেরোয় না! এবার বলুন তো, এমনই একটা জাদুর জন্য এতদিন অপেক্ষা করছিলেন কিনা?
তেলতেলে মুখকে টা টা বলুন
সিরামের ঘনত্ব অনেক পাতলা আর ত্বকে সাধারণ ময়শ্চারাইজের চেয়ে অনেক তাড়াতাড়ি শুষে যায়, কোনও তেলতেলে ভাবও থাকে না। ত্বক আর্দ্র থাকে বলে বেশি বেশি করে সেবামও তৈরি হয় না, আপনার মুখ থাকে কম তেলতেলে। দারুণ ব্যাপার না?

সিরাম মানেই সাশ্রয়
যত দামি দামি স্কিনকেয়ার প্রডাক্ট বাজারে পাওয়া যায়, তার অন্যতম হল সিরাম। কাজেই নিশ্চয়ই ভাবছেন টাকাটা বাঁচাবেন কীভাবে? আসলে সিরামের কার্যক্ষমতা খুব বেশি, ভালো একটা সিরাম ব্যবহার করলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি ফল পাবেন। অর্থাৎ একাধিক সাধারণ প্রডাক্ট কিনে টাকা নষ্ট করার আর দরকারই নেই! একগাদা নানান ধরনের ক্রিম, লোশন, ময়শ্চারাইজার না কিনে বরং একটা মাত্র সত্যিকারের কার্যকরী, দীর্ঘস্থায়ী প্রডাক্ট (রোজ মাত্র কয়েক ফোঁটাই যথেষ্ট) কেনার জন্যই না হয় (বুদ্ধি করে) খরচ করলেন আপনার কষ্টার্জিত অর্থ!
ছবি সৌজন্য: ইনস্টাগ্রাম
Written by Team BB on 26th Jun 2020