কিছু কিছু ত্বক পরিচর্যার পদ্ধতি এমন হয় যে দেখে মিনে হয় তা দিয়েই ত্বকের যাবতীয় সমস্যার সুরাহা হয়ে যাবে! কিন্তু বাস্তব হল, এমন কোনও ম্যাজিক উপাদান বা পদ্ধতি নেই যা দিয়ে ত্বকের সব ঝামেলা একবারে মিটিয়ে ফেলতে পারবেন আপনি! এই যেমন, ক্লে মাস্কের কথাই ধরুন! আয়ুর্বেদ সহ নানা সংস্কৃতিতে মেয়েদের রূপচর্চার অন্যতম উপাদান হিসেবে ক্লে মাস্ক ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। ক্লে মাস্ক একদিকে প্রাকৃতিক, তার জনপ্রিয়তাও প্রচুর! কিন্তু তার কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। জেনে নিন ক্লে মাস্ক কী কী করতে পারে আর কী পারে না!
ত্বকে ক্লে মাস্ক লাগালে কী কী উপকার পাবেন

আগেকার দিনে ক্ষত নিরাময়ের জন্য সাময়িক প্লাস্টার হিসেবে ক্লে অর্থাৎ কাদামাটি ব্যবহার করা হত। এ ছাড়া ত্বক ভালো রাখতে নানা উপটানেও মাটি থাকত। এই মাটিই পরে ক্লে মাস্কে রূপান্তরিত হয়। ত্বক ডিটক্স করতে ক্লে মাস্ক দারুণ কাজের, তাই মুখ গভীর থেকে পরিষ্কার করার জন্য ক্লে মাস্কের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এ কথা ঠিক, ত্বক থেকে বাড়তি তেল শুষে নিতে ক্লে মাস্ক সত্যিই কাজের। কিন্তু কোনও একটি উপাদান দিয়ে ত্বকের পূর্ণাঙ্গ ডিটক্স করা সম্ভব নয়।
ক্লে মাস্কের খনিজ উপাদান জলের সংস্পর্শে এসে সক্রিয় হয়ে ওঠে, এবং চুম্বকের মতো খোলে রোমছিদ্রের গভীর থেকে তেলময়লা টেনে বের করে আনে। ত্বক শীতল রাখতে পারে ক্লে মাস্ক, এবং একই সঙ্গে মৃত কোষ তুলতে এক্সফোলিয়েটর হিসেবে খুব ভাল কাজ করে। রোমছিদ্র পরিষ্কার থাকলে আর তেলের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে ব্রণ কম হয়, ত্বকও মসৃণ আর ঝকঝকে হয়ে ওঠে। কিন্তু
অতিরিক্ত ব্রণ কমাতে বা মুখে বয়সের দাগছোপ ঠেকাতে ক্লে মাস্ক সত্যিই কাজ করে কিনা, তার স্বপক্ষে স্পষ্ট কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তবে একটা বিষয়ে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, মুখে একবার ক্লে মাস্ক লাগালেই ত্বকের তেলাভাব কেটে গিয়ে একটা ঝকঝকে ম্যাট এফেক্ট পেয়ে যাবেন আপনি! সেটাই বা কম কী!
বিবির পছন্দ: Lakme Absolute Perfect Radiance Mineral Clay Mask
কখন ত্বকে ক্লে মাস্ক লাগাবেন না

আগেই বলেছি, ক্লে মাস্ক ত্বকের মৃত কোষ, রোমছিদ্রে জমে থাকা ধুলোময়লা পরিষ্কার করে ত্বক দীপ্তিময় করে তোলে। কিন্তু কোনও কোনও ত্বকের পক্ষে একটু কড়া হয়ে যেতে পারে। যাঁদের ত্বক শুষ্ক প্রকৃতির, তাঁরা সাবধানে ক্লে মাস্ক ব্যবহার করবেন, কারণ মুখের বাড়তি তেল কমানোর পাশাপাশি ক্লে মাস্ক ত্বকের আর্দ্রতাও কেড়ে নিতে পারে।
সেনসিটিভ বা স্পর্শকাতর ত্বকেও ক্লে মাস্ক সাবধানে ব্যবহার করা উচিত। কারণ ক্লে মাস্কের এক্সফোলিয়েটিং ও ভেষজ গুণের কারণে সেনসিটিভ ত্বকে প্রদাহ হতে পারে। ত্বকে সোরিয়াসিস বা এগজিমা থাকলেও ক্লে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত না, কারণ ক্লে মাস্কের কারণে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।
সহজ কথায় বললে, ত্বককে সজীব করে তুলতে আর মুখের তেলাভাব কমাতে রিল্যাক্সিং মাস্ক হিসেবে ক্লে মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। তবে ত্বকে কোনও সমস্যা থাকলে তার চিকিৎসা হিসেবে ক্লে মাস্ক একদম ব্যবহার করবেন না। বরং জোর দিন একটি পরিপূর্ণ ও বৈচিত্রময় রূপচর্চার রুটিনে যেখানে নানান জিনিস উপাদান হিসেবে থাকবে। একমাত্র তা হলেই দীর্ঘদিন ধরে সুন্দর আর ঝকঝকে রাখতে পারবেন আপনার ত্বক।
Written by Manisha Dasgupta on 5th Oct 2020