চুলে ভালোভাবে তেল মাখার সঠিক পদ্ধতি, শিখে নিন আমাদের বিউটি এডিটরের কাছে

Written by Manisha Dasgupta20th Oct 2020
চুলে ভালোভাবে তেল মাখার সঠিক পদ্ধতি, শিখে নিন আমাদের বিউটি এডিটরের কাছে

আমার একমাথা স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, মজবুত চুলের পেছনে দুটো কারণ রয়েছে - প্রতিদিন খাওয়ার পাতে মাছ আর সিফুড (বাঙালি মেয়ে হওয়ার সুবাদে) আর চুলে নিয়মিত তেল মাখার অভ্যেস। আমার পরিবারের অনেক মেয়েরই কোঁকড়া চুল, কাজেই চুলে তেল মাখার টোটকাটি বলতে গেলে বংশানুক্রমেই আমাদের মধ্যে রয়েছে - আমি চুলে যে স্টাইলই করি না কেন, তেল মাখতে আমায় হবেই! আর যেহেতু আমার চুল কোঁকড়া আর রুক্ষ, ফলে ভেঙে ঝরে যাওয়ার প্রবণতাও বেশি, বিশেষ করে চুল আঁচড়ানোর সময়। তাই শ্যাম্পু করার আগে চুলে তেল মাখতে আমি কখনও ভুলি না। ক্লান্তি কাটিয়ে আমার রিল্যাক্স করার অন্যতম উপায় চুলে তেল মাখা (আহ! কী যে শান্তি)!

তবে তেল মাখা মানে কিন্তু শুধুই খানিকটা তেল চুলে আর মাথায় লাগিয়ে মাসাজ করে নেওয়া নয়! সময় লাগলেও আমি এমনভাবে তেল মাখি যাতে তা আমার স্ক্যাল্প আর চুলের গভীরে ঢুকতে পারে। তা না করে শুধু ওপরে ওপরে তেল মাখলে তা শ্যাম্পু করলেই ধুয়ে যাবে। তাই চুলে তেল মাখার সবটুকু গুণ যাতে নিংড়ে নেওয়া যায়, তার জন্য 6টি ধাপ আমি মেনে চলি, তাতে চুল মজবুত আর কোমল থাকে, স্ক্যাল্পও প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়। আর ব্যাড হেয়ার ডে? ভুলে যান!

 

তেলটা তৈরি করুন

শ্যাম্পু করে খোলা হাওয়ায় চুল শুকিয়ে নিন

মাখার আগে তেল একটু গরম করে নিলে রুক্ষ চুলে তা সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। তেলটা গরম করার জন্য সরাসরি আগুনে বসাবেন না। প্রথমে কাচের বাটিতে তেল ঢেলে নিন, তারপর গরম জলের পাত্রে বসিয়ে গরম করে নিন। তেল বেশি গরম হয়ে গেলে তার পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়, আপনার চুল পুড়েও যেতে পারে। ডাভ এলিক্সির হেয়ার ফল রেসকিউ রোজ অ্যান্ড আমন্ড হেয়ার অয়েল/ Dove Elixir Hair Fall Rescue Rose and Almond Hair Oil এই মুহূর্তে আমার প্রিয় তেল। এই তেলের কয়েকটা গুণ আমার খুব ভালো লাগে - চুলে লাগানোর আধ ঘণ্টার মধ্যে পুরো তেলটা চুলে শুষে যায় (ফলে বালিশে তেলের দাগ লাগার ব্যাপারই নেই), খুব হালকা, একেবারেই চটচটে নয়, তাড়াতাড়ি ধুয়ে যায় আর গোলাপের খুব হালকা একটা গন্ধ রয়েছে এই তেলে (এটা আমার নিজের খুব ভালো লাগে)। আমন্ড আর আর্গান অয়েলের মিশ্রণ রয়েছে এই তেলে যা আমার রুক্ষ চুল মসৃণ রাখে, একটা খুব সুন্দর চকচকে ভাবও আসে চুলে। আমার চুলের ডগার দিকটা খুব শুকনো। বহু বছর ধরে এই সমস্যায় ভুগেছি। এই হেয়ার এলিক্সির ব্যবহার করার পর থেকেই আমার রুক্ষ চুল পুষ্টি পাচ্ছে।

 

চুল আঁচড়ে কয়েকটা ভাগে ভাগ করে নিন

শ্যাম্পু করে খোলা হাওয়ায় চুল শুকিয়ে নিন

প্রথমে আমি হালকা হাতে চুলটা আঁচড়ে সব জট ছাড়িয়ে নিই যাতে তেল মাসাজ করার সময় কাজটা সহজ হয়। আমার মতো ঘন চুল আপনার হোক বা না হোক, প্রথমেই চুলটাকে কয়েকটা ভাগে ভাগ করে নেবেন, যাতে পুরো মাথায় ভালোভাবে তেলটা লেগে যায়।

 

এবার পুরো চুলে তেল লাগান

শ্যাম্পু করে খোলা হাওয়ায় চুল শুকিয়ে নিন

চুলটা সেকশনে ভাগ করে নিয়েছেন তো? এবার প্রতিটা ভাগে আলাদা আলাদা করে তেল লাগান। তেলে আঙুল ডুবিয়ে নিন, তারপর সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগান, আর প্রতিবার তেল লাগানোর পরে জায়গাটা দু'সেকেন্ড মাসাজ করুন। চুলের ডগার দিকটাতেও ভালো করে তেল মাখবেন, তাতে চুল বাড়তি আর্দ্রতা পাবে। তেল মাখার সময় চুলের ডগার দিকটা ব্রাশ করেও নিতে পারেন, কিন্তু দেখবেন যেন জট না পড়ে যায়... তেল মাখা চুল ঠিকমতো ব্রাশ না করলে চুল ভেঙে ঝরে যেতে পারে, তাই সাবধানে ব্রাশ করবেন।

 

আঙুলের ডগা দিয়ে মাসাজ করে খোঁপা বেঁধে নিন

শ্যাম্পু করে খোলা হাওয়ায় চুল শুকিয়ে নিন

চুলে তেল ভালোভাবে লাগানো হয়ে গেলে পুরো মাথা আঙুলের ডগা দিয়ে চক্রাকারে মাসাজ করুন। স্ক্যাল্পে ডিট্যাংলার ব্রাশও ব্যবহার করতে পারেন, তবে খুব বেশিক্ষণ ধরে করবেন না, চুলের গোড়াতেও যেন বেশি টান না পড়ে। খুব জোরে জোরে মাথা ঘষবেন না, হালকা হাতেই সবচেয়ে ভালো মাসাজ হবে। হয়ে গেলে পুরো চুলটা খোঁপায় বেঁধে নিন।

 

গরম তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন

শ্যাম্পু করে খোলা হাওয়ায় চুল শুকিয়ে নিন

সুতির গামছা, তোয়ালে বা মসলিনের কাপড় জলে ভিজিয়ে নিংড়ে নিন, তারপর সেটা মাইক্রোওয়েভে 30 সেকেন্ডের জন্য গরম করুন। আমি গরম তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে রাখি, ঠান্ডা হয়ে গেলে ফের গরম করে নিয়ে আবার জড়াই। চুলে তেলটা আধঘণ্টা থেকে একঘণ্টা থাকে, তার মধ্যে তিন থেকে চারবার এরকম করি। গামছা যতবার ইচ্ছে গরম করতে পারেন, তবে খুব বেশি গরম করবেন না। হাতে স্বাভাবিকভাবে ধরতে পারছেন, ছ্যাঁকা লাগছে না, এরকম তাপমাত্রায় গরম করুন, তাতে চুল ভালো থাকবে।

 

শ্যাম্পু করে খোলা হাওয়ায় চুল শুকিয়ে নিন

শ্যাম্পু করে খোলা হাওয়ায় চুল শুকিয়ে নিন

চুলে তেলটা ভালোভাবে বসে গেছে বুঝতে পারলে রোজকার শ্যাম্পু দিয়ে আমি চুল ধুয়ে ফেলি, তারপর কন্ডিশনার লাগাই। লাভ বিউটি অ্যান্ড প্ল্যানেট অ্যান্টি ফ্রিজ কম্বো/Love Beauty & Planet Anti Frizz Combo আমার এই মুহূর্তে সবচেয়ে পছন্দের । বর্ষার আর্দ্রতা আর গরমের কুপ্রভাব ঠেকিয়ে আমার রুক্ষ চুল মসৃণ আর কোমল করে তোলে এই কম্বো। আর আমার ফাইনাল পরামর্শ? ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না, চুল শুকিয়ে নিন খোলা হাওয়ায়!

Manisha Dasgupta

Written by

Author at BeBeautiful.
2657 views

Shop This Story

Looking for something else