চুলের নিয়মিত যত্ন নেন এমন যে কাউকে জিজ্ঞেস করুন, চুলের ঠিকমতো দেখভাল করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান তাঁর কাছে কোনটা, উত্তর মিলবে হেয়ারকেয়ার মাস্ক। ভিটামিন আর প্রোটিনের পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ঘন ক্রিমের মতো ফরমুলার হেয়ার মাস্ক চুলের যে যত্ন করে, তার চেয়ে বেশি পুষ্টি আর কোনও কিছুতে নেই! আমাদের মধ্যে অনেকেই হেয়ার মাস্কিং রুটিনের অগ্রপশ্চাৎ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, আবার অনেকেই ঠিক কীভাবে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে হয় জানেন না। ঠিক কী না? সেজন্যই আমরা পুরো প্রক্রিয়াটা একটু সহজ করে দিচ্ছি। এখানে আমরা আপনাদের জানাব, হেয়ার মাস্কের সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ পাওয়ার জন্য তা লাগানোর সময় কী কী করা যাবে, আর কী কী মোটেও করা চলবে না! তা হলে আর কী, চোখ বুলিয়ে নিন!
- 01. করবেন: চুলের ধরন অনুযায়ী সঠিক হেয়ার মাস্ক বেছে নিন
- 02. করবেন না: তেলতেলে নোংরা চুলে মাস্ক লাগাবেন না
- 03. করবেন: মাস্ক চুলে সমানভাবে মেখে নিন
- 04. করবেন না: মাস্ক সারা রাত মেখে থাকবেন না
- 05. করবেন: সপ্তাহে একবার কি দু'বার মাস্ক ব্যবহার করুন
01. করবেন: চুলের ধরন অনুযায়ী সঠিক হেয়ার মাস্ক বেছে নিন

যে কোনও অন্য হেয়ার কেয়ার প্রডাক্টের মতোই চুলের আলাদা আলাদা প্রয়োজনের জন্য হেয়ার মাস্কও ভিন্ন হয়। দোকান থেকে যে কোনও মাস্ক তুলে নেবেন না, বরং দেখে নিন কোন মাস্ক আপনার চুলের ধরনের উপযোগী, আর আপনার সমস্যার মোকাবিলা করতে পারে। যেমন রুক্ষ আর নিষ্প্রাণ চুল যদি আপনার সমস্যা হয়, তা হলে বেছে নিন ট্রেসমে কেরাটিন ডিপ স্মুদিং হেয়ার মাস্ক/ TRESemmé Keratin Deep Smoothing Mask । কেরাটিন আর মারুলা অয়েলে সমৃদ্ধ এই মাস্ক আপনার চুল ডিপ কন্ডিশন করে এবং চুল রাখে মসৃণ, রুক্ষতাহীন, নরম, জটমুক্ত। উজ্জ্বল বাউন্সি চুল সামলানোও অনেক সহজ হয়ে যায়।
02. করবেন না: তেলতেলে নোংরা চুলে মাস্ক লাগাবেন না

এই বিষয়টা নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি আছে ঠিকই, কিন্তু সঠিক কথাটা হল, নোংরা (আর শুকনো) চুলে হেয়ার মাস্ক ভালোভাবে কাজ করতে পারে না, কারণ তেল আপনার চুলে আর স্ক্যাল্পে লেগে থাকে আর ফলে মাস্ক চুলের গভীরে প্রবেশ করতে পারে না। তাই শ্যাম্পু করার পর পরিষ্কার ভেজা চুলে মাস্ক লাগানোই বুদ্ধিমানের কাজ। তাতে মাস্কের পুষ্টিগুণ চুলের গভীরে ভালোভাবে শোষিত হতে পারে এবং চুলে এনে দেয় মনের মতো চমক।
03. করবেন: মাস্ক চুলে সমানভাবে মেখে নিন

চুলে যেমন তেমন করে মাস্ক লাগালে হবে না। এমনভাবে মাস্ক লাগান যাতে তা প্রতিটি চুলের গায়ে (মাঝামাঝি অংশ থেকে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত) লেগে যায় এবং সমস্ত ক্ষতি আর নিষ্প্রাণভাব সারিয়ে তুলতে পারে। মোটা দাঁড়ার চিরুনি অথবা আঙুল দিয়েই ঘন ক্রিমের মতো মাস্ক পুরো চুলে সমানভাবে মেখে নিন। লাগানো হয়ে গেলে চুল হালকা মাসাজ করুন যাতে মাস্ক চুলের সঙ্গে মিশে যায়। তারপর 15-20 মিনিট রেখে দিন।
04. করবেন না: মাস্ক সারা রাত মেখে থাকবেন না

হেয়ার মাস্কে শক্তিশালী ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডান্ট আর প্রাকৃতিক তেল রয়েছে, চুল ডিপ কন্ডিশন করতে তার 20-30 মিনিটের বেশি সময় লাগে না। যদি সারা রাত চুলে মাস্ক লাগিয়ে রাখেন, তা হলে চুল অতিরিক্ত তেলতেলে আর ভারী হয়ে যেতে পারে। তা ছাড়া মাস্কের রাসায়নিক উপাদান চুলের কিউটিকলের ক্ষতি করে চুল ভঙ্গুর করে তুলতে পারে। চুল ভঙ্গুর হয়ে গেলে তাতে আর্দ্রতা ধরবে না, এবং শেষ পর্যন্ত চুল উঠে যাবে।
05. করবেন: সপ্তাহে একবার কি দু'বার মাস্ক ব্যবহার করুন

হেয়ার মাস্কের রুটিন কতটা উপকারী বোঝার পর আপনার ইচ্ছে করবে প্রতিবার শ্যাম্পু করার পরেই মাস্ক লাগাতে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত মাস্ক ব্যবহার করলে হিতে বিপরীত হওয়ার ভয় থাকে। মাস্কে যেহেতু ঘন এবং অত্যন্ত ভারী বাটার, তেল, প্রোটিন এবং ভিটামিন থাকে, তাই প্রতিদিন মাস্ক লাগালে তা থেকে স্ক্যাল্প আর চুলে অবশেষ জমে যেতে পারে এবং তার ফলে চুল ন্যাতানো দেখাবে। মাস্ক আর আর্দ্রতার অতিরিক্ত শোষণের ফলে চুলের স্থিতিস্থাপকতা অর্থাৎ ইলাস্টিসিটিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং তার ফলে চুল ভেঙে ঝরে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই সবচেয়ে সেরা ফল পেতে সপ্তাহে একবার কি দু'বার মাস্ক ব্যবহার করাই ভালো।
Written by Manisha Dasgupta on 18th Oct 2021