"কয়েক মাস অন্তর কি শ্যাম্পু পালটে ফেলা উচিত?" এই প্রশ্নটা বারবার ঘুরেফিরে আসে। অথচ এ প্রশ্নের কোনও এক কথায় উত্তর হয় না! প্রচলিত বিশ্বাস হল, বেশ কয়েক মাস একটা নির্দিষ্ট শ্যাম্পু ব্যবহার করার পর চুল আর স্ক্যাল্প সেই ফর্মুলার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন আর প্রথম দিকের মতো কাজ হয় না। কিন্তু সত্যিটা হল, আপনার চুলে শ্যাম্পু যে ঠিকমতো কাজ করছে না, তার সঙ্গে শ্যাম্পুর ফর্মুলার কোনও সম্পর্ক নেই! আসল কারণ হল, কয়েক মাস কোনও নির্দিষ্ট শ্যাম্পু ব্যবহারের পর স্বাভাবিক নিয়মেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়, তা ছাড়া মাথায় প্রডাক্টের অবশেষ জমতে থাকে। এ সব মিলিয়ে আপনার চুল নেতিয়ে যায়, নিষ্প্রাণ দেখায়।
কিন্তু তার মানে গতানুগতিক একই হেয়ার কেয়ার রুটিন মেনে চলবেন, তা বলছি না! চুলে প্রাণের সজীবতা ধরে রাখতে মাঝেমধ্যে হেয়ার কেয়ার রুটিনে কিছু বদল আনাও দরকার। তার কারণ, লাইফস্টাইল বা আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে কোনও একটা নির্দিষ্ট প্রডাক্ট চুলের পক্ষে ততটা কার্যকর আর নাও থাকতে পারে! তবে যদি এমন কোনও শ্যাম্পু পেয়ে থাকেন যা আপনার চুলে দারুণ ভালো কাজ করে, তবে চট করে তা পালটে ফেলবেন না! বরং বাহ্যিক কারণগুলো খেয়াল করুন, আর তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে হেয়ার কেয়ার রুটিন পালটান, তা হলেই সবচেয়ে ভালো ফল পাবেন। কিছু টিপস রইল...
- 01. মাথায় নোংরা জমা ঠেকাতে ক্ল্যারিফায়িং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
- 02. মাথায় রাখুন আবহাওয়ার পরিস্থিতি
- 03. জীবনধারার পরিবর্তন
- 04. আসল হল ভেতরের কথা
01. মাথায় নোংরা জমা ঠেকাতে ক্ল্যারিফায়িং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন

এই যে কোনও একটা নির্দিষ্ট প্রডাক্ট ব্যবহার করতে শুরু করার কয়েক মাস পর আর আগের মতো ফল পাওয়া যায় না, তার মূল কারণটা পরিবেশগত আর দ্বিতীয় কারণ হল, প্রডাক্টের অবশেষ স্ক্যাল্পে জমে যাওয়া। কোমল সালফেটহীন শ্যাম্পু ঠিক করে স্ক্যাল্প পরিষ্কার করতে পারে না, অথবা শ্যাম্পুর পর ঠিক করে চুল ধোওয়া হয় না বলে প্রডাক্ট স্ক্যাল্পে জমতে থাকে। চুল আর মাথা খুব ভালো করে সাফ করতে মাসে দু'বার ক্ল্যারিফায়িং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
বিবি-র পছন্দ: ডাভ এনভায়রনমেন্টাল ডিফেন্স শ্যাম্পু/Dove Environmental Defence Shampoo
02. মাথায় রাখুন আবহাওয়ার পরিস্থিতি

আপনি যেখানে থাকেন, সেই অঞ্চলের আবহাওয়ার কথা মাথায় রাখুন। প্রচণ্ড শীতের শুকনো আবহাওয়ায় এমন শ্যাম্পু আপনার চুল পরিচর্যার রুটিনে যোগ করা দরকার যাতে পর্যাপ্ত ময়শ্চারাইজার রয়েছে। একইভাবে মুম্বই বা কলকাতার মতো অতিরিক্ত হিউমিড বা আর্দ্র আবহাওয়ায় থাকতে হলে হেয়ার কেয়ার রুটিনে রুক্ষতা বা উড়ো চুল নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য দৈনিক হেয়ার কেয়ার রুটিনে ফ্রিজ কন্ট্রোল সলিউশন থাকা দরকার।
বিবি-র পছন্দ: ট্রেসমে ক্লাইমেট প্রোটেকশন শ্যাম্পু / Tresemme Climate Protection Shampoo
03. জীবনধারার পরিবর্তন

চুলের পরিচর্যার রুটিন তৈরির সময় মাথায় রাখুন নিজের জীবনধারা। আপনাকে যদি দিনভর বাইরে বাইরে থেকে কাজ করতে হয়, তার অর্থ আপনাকে সারাদিন দূষণের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে। আপনার শ্যাম্পুও বাছাই করতে হবে সে কথা মাথায় রেখেই। যাঁরা ব্যায়াম করেন, তাঁদের ব্যায়ামের ধরনের ওপরেও নির্ভর করে শ্যাম্পুর ধরন। যাঁরা সাঁতার কাটেন তাঁদের একরকম শ্যাম্পু, আবার যাঁরা দৌড়োন তাঁদের আর একরকম শ্যাম্পু। আবার আপনি ঠিক কেমনভাবে জীবন কাটান, তার ওপরেও নির্ভর করে শ্যাম্পুর ধরন। যেমন, খুব ঘনঘন হিট স্টাইলিং করতে হলে ড্যামেজ রিপেয়ারিং শ্যাম্পু হেয়ার কেয়ার রুটিনে থাকতেই হবে।
বিবি-র পছন্দ: টিজি বেড হেড আর্বান অ্যান্টি-ডোট রিকভারি লেভেল টু শ্যাম্পু / TIGI Bed Head Urban Anti-Dote Recovery Level 2 Shampoo
04. আসল হল ভেতরের কথা

বাইরে থেকে যত যত্নআত্তিই করুন না কেন, ভেতরের কথা, অর্থাৎ আপনি কী খাচ্ছেন তা চুলের যত্নের ক্ষেত্রে খুব বড় ভূমিকা পালন করে। চুল পরিচর্যার রুটিন তৈরির সময় মাথায় রাখুন আপনার খাদ্যাভ্যাস। আপনার খাবারে যদি কোনও পুষ্টিগুণ কম থাকে, তা পূরণ করার জন্য সঠিক শ্যাম্পু বেছে নিতে হবে। কোনও প্রডাক্ট ঠিকমতো কাজ না করলে সে ক্ষেত্রেও অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখতে হবে। যেমন যদি হরমোনের তারতম্য থেকে আপনার স্ক্যাল্প আর চুল বেশি তেলতেলে হয়ে পড়ে, তা হলে কিছুদিনের জন্য এমন প্রডাক্ট ব্যবহার করতে হবে যা তেলমুক্ত ও চুল বাড়তি তেলা করবে না।
Written by Manisha Dasgupta on Dec 16, 2020