গোলাপের রং লাল, ভায়োলেটের নীল...সে তো আমরা সকলেই জানি | কিন্তু আপনি কি জানতেন যে ত্বকের পরিচর্যার ক্ষেত্রে এইসব ফুলের কতটা কাজে দেয়? এমনকী অবাঞ্ছিত দাগও কমিয়ে দিতে পারে? সেই অনাদিকাল থেকেই ফুল ব্যবহার করা হয়ে আসছে ত্বকের পরিচর্যায় ব্যবহৃত প্রসাধনী তৈরিতে| লোশন থেকে বডিওয়াশ, নানা ধরনের ফুল জায়গা করে নিয়েছে আমাদের প্রসাধনদ্রব্যে| এখানে অত্যন্ত পরিচিত আর জনপ্রিয় কিছু ফুলের ব্যবহারের কথা বলা হল, যেগুলি খুব ভালোভাবে ত্বকের পরিচর্যা করে, অজস্র গুণে সমৃদ্ধ এবং জেনে নিন কীভাবে আপনিও আপনার ত্বকের নিয়মিত যত্ন নিতে এগুলি ব্যবহার করতে পারেন|
গোলাপ

রূপচর্চায় সবচেয়ে চেনা উপাদানগুলির অন্যতম গোলাপ পরিচিত তার জল যোজনকারী গুণ অর্থাৎ হাইড্রেটিং প্রপার্টির জন্য| এটি ত্বকের প্রদাহ বা সূর্যের তাপে পুড়ে যাওয়া ত্বক সারিয়ে তোলার ক্ষমতা রাখে| তাই সৌন্দর্য-বিশেষজ্ঞরা গ্রীষ্মকালে কয়েক ঘণ্টা পরপর ত্বকে গোলাপজল স্প্রে করার পরামর্শ দেন| নিয়মিত ত্বকে এই গোলাপজল স্প্রে করলে ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস ... দুই-ই কমে এবং ত্বকের pH-এর ভারসাম্য ঠিকঠাক বজায় থাকে|
জুঁই

পশ্চিম আর দক্ষিণ ভারতে কেশ প্রসাধনের সবচেয়ে প্রিয় অঙ্গ হল জুঁই ফুল| এই ফুলটির কিন্তু সৌন্দর্যচর্চার ক্ষেত্রে প্রচুর গুণ আছে| সব রকমের ত্বকের পক্ষে আদর্শ। আর যে কোনও ঋতুতে ব্যবহার করা যায়। এই ফুল আমাদের ত্বককে ফ্রি র্যাডিকালস আর পরিবেশসংক্রান্ত ক্ষতিকর পরিস্থিতি দুইয়ের হাত থেকেই সুরক্ষা দেয়। শীতকালে এটি ত্বকে প্রয়োজনীয় জল সরবরাহ করতে পারে এবং শুষ্ক আর সামঞ্জস্যহীন ত্বক থেকে আমাদের রক্ষা করে| লাক্স ভেলভেট টাচ বডি ওয়াশ উইথ জ্যাসমিন অ্যান্ড আমন্ড অয়েল আপনার ত্বকের উপরে আর্দ্রতার প্রলেপ দেয় এবং ত্বককে রাখে কোমল ও উজ্জ্বল|
ক্যামোমাইল

ক্যামোমাইল নানা কাজ করে দক্ষতার সঙ্গে| এর মধ্যে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস এবং অ্যান্টিসেপটিকের গুণ| এটি অ্যাকনে থেকে ক্ষত, র্যাশ থেকে বলিরেখা... নানা ধরনের ত্বকের সমস্যার মোকাবিলা করতে সক্ষম| ক্যামোমাইলে আছে স্বাভাবিক কিছু গুণ, যার দৌলতে এটি চমৎকারভাবে ত্বক আর্দ্র করতে পারে আর ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বা ইলাস্টিসিটি বাড়ায়| এই ফুলের গুণ উপভোগ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল ক্যামোমাইল টি ব্যাগ | চা পানের পরে ব্যবহৃত টি ব্যাগটি ফ্রিজে রেখে দিন আর ইচ্ছেমতো যখন খুশি সেটি আলতো করে মুখের উপরে বোলান|
জবা

আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিডসের একটি সমৃদ্ধ উৎস হল জবাফুল| আপনার ত্বকের পরিচর্যায় এই ফুলটি নিয়মিত ব্যবহারের অভ্যেস করলে আপনার ত্বককে দেখাবে কমবয়সি আর ত্বকে কালো দাগছোপও কমে যাবে| আপনার ত্বককে স্বাস্থ্যে আর উজ্জ্বলতায় ভরপুর করে তোলা ছাড়াও এটি আপনার চুলেও কাজ করবে ম্যাজিকের মতো| ফেস মাস্ক আর স্ক্রাবে এই ফুলটি ব্যবহার করুন আর এই ফুলের তেল চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ঘষে ঘষে মাসাজ করুন, দেখবেন চুল পড়া কেমন কমে গেছে!
পদ্ম

ভারতের পবিত্র ফুল হিসেবে গণ্য হওয়া এই ফুলের পাপড়িতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আর অন্য বেশ কিছু অত্যাবশ্যক খনিজ পদার্থ| এটি তৈলাক্ত ত্বকে সিবাম উৎপাদনে ভারসাম্য রক্ষা করে আর ত্বকের ছিদ্রমুখ বন্ধ হয়ে যাওয়া আর অ্যাকনে প্রতিরোধ করে| পদ্ম থেকে তৈরি চুলের তেল চুল পড়া কমায়, অকালে চুল পেকে যাওয়া প্রতিরোধ করে আর চুলকুনি কমায়|
Written by Ishani Roychoudhuri on 8th Mar 2019