গর্ভবতী মেয়েদের রূপচর্চা সংক্রান্ত 10টি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

Written by Manisha Dasgupta1st Apr 2021
গর্ভবতী মেয়েদের রূপচর্চা সংক্রান্ত 10টি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক


গর্ভাবস্থায় যে কোনও মেয়ের মনেই নানা বিষয়ে একরাশ প্রশ্ন জমা হয়। তার মধ্যে একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে সৌন্দর্য আর রূপচর্চা বিষয়ক প্রশ্ন। ত্বকের যত্ন করতে কী ধরনের জিনিস ব্যবহার করা উচিত? কী কী উপাদান এড়িয়ে চলা দরকার? এ সময় চুলে রং করা কি নিরাপদ? প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার পর এতরকম প্রশ্নের ভিড়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক। সেজন্যই আমরা সাহায্য নিয়েছি একজন বিশেষজ্ঞের যিনি দেবেন গর্ভাবস্থায় রূপচর্চা বিষয়ক আপনার সব প্রশ্নের উত্তর।

পুরস্কারজয়ী ত্বক বিশেষজ্ঞ ডক্টর গীতিকা মিত্তল গুপ্তা (ইনস্টাগ্রামে ওঁকে পাবেন @drgeetika এই হ্যান্ডলে) এমন 10 টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন যা গর্ভবতী মেয়েরা সবচেয়ে বেশি করেন। ডক্টর গীতিকা আইএসএএসি লুক্স (ইন্টারন্যাশনাল স্কিন অ্যান্ড অ্যান্টি-এজিং সেন্টার)-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং 13 বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে ওঁর ঝুলিতে। ফলে চোখ বন্ধ করে মেনে চলতে পারেন ওঁর পরামর্শ!

গর্ভাবস্থায় একজন মেয়ের মনে যে সব প্রশ্ন আসতে পারে তার সব উত্তর দিয়েছেন ডক্টর গীতিকা। পড়তে থাকুন।

 

 

বিবি: গর্ভাবস্থায় ব্রণ কমানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় কী?

বিবি: বাড়িতে ঘরোয়া উপায়ে স্ট্রেচ মার্ক কীভাবে কমানো যায়?

ডক্টর গীতিকা: গর্ভাবস্থায় রেটিনল আর স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ব্যবহার না করাই ভালো। ফলে একটা দুটো ব্রণ বেরোলে ক্লিন্ডামাইসিন লাগাতে পারেন। প্রচুর শাকসবজি আর ফল খান, যতটা সম্ভব সুস্থ জীবনশৈলী মেনে চলার চেষ্টা করুন। ব্রণ বেড়ে গেলে ত্বক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন, কোমল ল্যাকটিক অ্যাসিড পিল ব্যবহার করবেন কিনা জেনে নিন।

 

বিবি: গর্ভবতী অবস্থায় কি চুল রং করা যায়?

বিবি: বাড়িতে ঘরোয়া উপায়ে স্ট্রেচ মার্ক কীভাবে কমানো যায়?

ডক্টর গীতিকা: যদিও পার্মানেন্ট আর সেমি-পার্মানেন্ট হেয়ার ডাই খুব একটা টক্সিক নয়, তবুও এ সব রং ত্বকে শুষে যেতে পারে। টাচ-আপ করা তুলনায় নিরাপদ। তবে আমার পরামর্শ হল আপাতত কিছুদিনের জন্য চুল হাইলাইট আর ওমব্রে করানো ভুলে যান, গর্ভাবস্থাটাই উপভোগ করুন!

 

বিবি: গর্ভাবস্থার পরে চুল উঠতে শুরু করে। কীভাবে কমাব চুল ওঠা?

বিবি: বাড়িতে ঘরোয়া উপায়ে স্ট্রেচ মার্ক কীভাবে কমানো যায়?

ডক্টর গীতিকা: সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যায়, ফলে চুলের টেলোজেন দশা শুরু হয়। এই সময়ে চুল উঠতে শুরু করে। বেশিরভাগ মেয়েরই প্রচণ্ড বেশিরকম চুল ওঠে, চুল পাতলা হয়ে যায়। এই অবস্থা দু' থেকে তিনমাস মতো থাকতে পারে। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে এমন খাবার খান, সঙ্গে খান ওমেগা-3-6-9 সাপ্লিমেন্ট। চুল পাতলা হয়ে যাওয়া এড়াতে সিঁথি বদলে ফেলুন। কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট বা অতিরিক্ত হিট স্টাইলিং এড়িয়ে চলুন। চুলের ভঙ্গুর দশা যাতে আর না বাড়ে তার জন্য এ সব নিয়ম মানতে হবে। এর পরেও যদি চুল ওঠা না কমে, তা হলে প্লেটলেট রিচ প্লাজমা বা পিআরপি থেরাপি করে দেখতে পারেন। এই থেরাপিতে আপনার নিজের রক্তকেই নতুন চুলের জন্ম দেওয়ার কাজে লাগানো হয়। চুল পাতলা হয়ে যাওয়া ঠেকাতে পিআরপি খুব ভাল পদ্ধতি এবং খুবই নিরাপদ। তা ছাড়া মাসে একটাই সেশন নিতে হয় বলে আপনার শিশুকে ছেড়ে বেশি সময় বাইরে থাকারও প্রশ্ন নেই!

 

বিবি: মেলাসমার সমস্যা কি সাময়িক? কীভাবে মোকাবিলা করব এই সমস্যার?

বিবি: বাড়িতে ঘরোয়া উপায়ে স্ট্রেচ মার্ক কীভাবে কমানো যায়?

ডক্টর গীতিকা: গর্ভাবস্থায় হরমোনের মাত্রায় পরিবর্তন আসে বলে 80% মহিলা হাইপারপিগমেন্টেশনের সমস্যায় ভোগেন। এতে মুখে নীলচে বা ছাই-বাদামি রঙের ছোপ পড়ে, যা মেলাসমা নামে পরিচিত। গর্ভবতী বা সদ্য মা-হওয়া মেয়েদের কাছে এ এক বিরাট সমস্যা! কিছু কিছু মেয়ের ক্ষেত্রে এই সমস্যা সাময়িক হলেও অনেকের বেলায় সন্তান জন্ম দেওয়ার পরেও তা যেতে চায় না, তখন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। ডার্মাটোলজিস্ট আপনার পূর্ণাঙ্গ ডাক্তারি পরীক্ষা ও ত্বকের পরীক্ষা করার পর চিকিৎসা পদ্ধতি জানাবেন। লেসার থেরাপি আর পিল এবং সেই সঙ্গে লাগানোর ক্রিম দেওয়া হতে পারে। সাধারণত তরল, ক্রিম বা জেল আকারে হাইড্রোকুইনন দেওয়া হয়। লেসার টোনিং করাতে পারেন, তাতে পিগমেন্টেশন কমবে এবং শরীরে একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে যা বেশি করে কোলাজেন আর ইলাস্টিন তৈরি করবে।

 

বিবি: সদ্য যাঁরা মা হয়েছেন, তাঁদের ত্বকের যত্নের জন্য কী কী টিপস মেনে চলা উচিত?

বিবি: বাড়িতে ঘরোয়া উপায়ে স্ট্রেচ মার্ক কীভাবে কমানো যায়?

ডক্টর গীতিকা: সদ্য শিশুর জন্ম দিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের দরকার ভারসাম্য বজায় রাখা। পিএইচ ভারসাম্যযুক্ত ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন, একটু কম শক্তিশালী ভিটামিন সি সিরাম আর আই ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। সানস্ক্রিন বাদ দেবেন না। ফিজিক্যাল সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এই সানস্ক্রিন মাখলে মুখের ওপর একটা সাদা আস্তরণ থেকে যায় ঠিকই, কিন্তু এই সানস্ক্রিন কেমিক্যাল সানস্ক্রিনের চেয়ে ভালো কারণ এই সানস্ক্রিন প্রত্যক্ষভাবে রোদ আটকে দিতে পারে। ত্বকে নিয়মিত মাসাজ করুন। শরীর টোন করতে বডি বাটার আর বডি অয়েল মাখুন। চোখমুখ যাতে ফোলা না দেখায়, তাই নুন খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করুন।

 

বিবি: বাড়িতে ঘরোয়া উপায়ে স্ট্রেচ মার্ক কীভাবে কমানো যায়?

বিবি: বাড়িতে ঘরোয়া উপায়ে স্ট্রেচ মার্ক কীভাবে কমানো যায়?

ডক্টর গীতিকা: স্ট্রেচ মার্ক কমাতে হলে বাড়িতে কিছু টোটকা প্রয়োগ করতে পারেন। জায়গাগুলোয় ক্রিম আর তেল লাগালে ত্বক আর্দ্র থাকে। শিয়া বাটার, নারকেল তেল, অ্যাভোকাডো অয়েল, হায়ালুরনিক অ্যাসিড এবং অন্য আরও অনেক হাইড্রেটিং উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। মনে রাখবেন ত্বকে চুলকানির মূল কারণ হল শুষ্কতা। নারকেল তেল আর ভিটামিন ই ক্যাপসুল (আরও অনেক ভেষজ তেলের সংমিশ্রণে) চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। যাঁদের ত্বক খুব শুষ্ক তাঁদের ক্ষেত্রে এই উপাদানগুলি বিশেষভাবে কার্যকর, কারণ তেল শোষিত হতে সময় বেশি লাগে। লাল বা বেগুনি রঙের স্ট্রেচ মার্কের দাগও হালকা করা সম্ভব। ডার্মাটোলজিস্ট বা কসমেটোলজিস্টের পরামর্শ নিয়ে হাইড্রোকুইনোন অয়েন্টমেন্ট লাগাতে হবে। ঘরোয়া চিকিৎসা ছাড়াও কিছু ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন যাতে সার্জারি লাগে না। আইএসএএসি লুক্স-এ আমরা তিনটি পদ্ধতিতে চিকিৎসা করি, তার মধ্যে রয়েছে লেসার ট্রিটমেন্ট, পিল আর পিআরপি (স্ট্রেচনিল)।

Manisha Dasgupta

Written by

Author at BeBeautiful.
4477 views

Shop This Story

Looking for something else