বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ, আর অক্টোবর-নভেম্বর মাস মানে তো একের পর এক উৎসব! আর কে না জানে, উৎসব মানেই খাওয়াদাওয়া, বিশেষ করে মিষ্টি খাওয়া! কাজেই নানা অছিলায় খাবো না খাবো না করেও মিষ্টি খাওয়া হয়েই যায়, আর সত্যি বলতে, মিষ্টি খেতে ভালোই লাগে! মুশকিল হয়, যখন সেই মিষ্টির প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকের ওপর! ইংরেজিতে এর একটা পরিভাষাও রয়েছে, 'সুগার স্কিন'। অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার পরের দিন সকালে অনেকেরই ত্বক একটু নিষ্প্রাণ, নির্জীব দেখায়। এমনকী, খেয়াল করে দেখবেন এই উৎসবের মরশুমেই মুখে সূক্ষ্ম রেখা, বলিরেখার উৎপাত বেশি হয়, চোখের কোলে কালিও পড়ে বেশি। ব্রণর উপদ্রবের কথা তো ছেড়েই দিলাম! আর এ সবের পেছনে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত মিষ্টি খেয়ে ফেলা। কিন্তু উৎসবের এই মরশুমে মিষ্টি খাবেন না, তাও কি হয়? আপনার মিষ্টি প্রীতির কথা মাথায় রেখেই কিছু টিপস দিলাম আমরা...
- মিষ্টি খাওয়ার পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে গেলে তা ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকর কেন?
- হঠাৎ অতিরিক্ত মিষ্টি খেয়ে ফেলার কুফল থেকে ত্বককে রক্ষা করবেন কীভাবে?
মিষ্টি খাওয়ার পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে গেলে তা ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকর কেন?

চিনি শরীরের ভেতর প্রদাহ তৈরি করে। এই প্রদাহের ফলে শরীরে উৎসেচক বা এনজাইম তৈরি হয় যা ত্বকের কোলাজেন ভেঙে দেয়। ফলে ত্বকের টানটান ভাব নষ্ট হয়ে যায়, ত্বক তেলতেলে দেখায়। তা ছাড়া চিনি ত্বক থেকে আর্দ্রতাও শুষে নেয়, ফলে ত্বক নিষ্প্রাণ, বিবর্ণ দেখায়। আপনি যত বেশি মিষ্টিজাতীয় খাবার খাবেন, আপনার মধ্যে তত ইনসুলিন প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তৈরি হবে, যা থেকে শরীরে রোমের আধিক্য দেখা দিতে পারে (হারসুটিজম) এবং গলায় আর ঘাড়ে কালো ছোপ পড়তে পারে।
হঠাৎ অতিরিক্ত মিষ্টি খেয়ে ফেলার কুফল থেকে ত্বককে রক্ষা করবেন কীভাবে?

উৎসবের মরশুমে মিষ্টি খাওয়া বন্ধ করে দিতে আমরা বলছি না। কিন্তু কিছু সহজ নিয়ম মাথায় রাখলে ত্বকের ওপর চিনির কুপ্রভাব অনেকটাই এড়িয়ে যেতে পারবেন আপনি:
01. চিনি বলতে আমরা বাড়তি আর প্রক্রিয়াজাত চিনির কথা বোঝাচ্ছি। উদ্ভিদ, ফল বা সবজি থেকে প্রাকৃতিক মিষ্টি পাওয়া যায়, তার তেমন প্রভাব ত্বকের ওপর পড়ে না। ফলে প্রসেসড চিনি থেকে দূরে থাকুন।
02. দৈনিক জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান, এতে শরীর আরও ভালো করে চিনি শুষে নিতে পারবে।
03. কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার পরিমাণ কমান, জোর দিন শাকসবজি আর প্রোটিন খাওয়ার ওপরে। তাতে কখনও বেশি মিষ্টি খেয়ে ফেললেও ব্যাল্যান্স থাকবে।
04. রোজকার ডায়েটে অ্যান্টি-অক্সিডান্টে ভরপুর পানীয় রাখুন। গাজরের রস বা গ্রিন টি মিষ্টি খেয়ে ফেলার কারণে আপনার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের আচমকা ওঠাপড়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
05. ত্বক পরিচর্যার রুটিনে মনোযোগী হয়ে উঠুন। দিনের শেষে খুব ভালো করে সমস্ত মেকআপ তুলে ফেলুন, বেশি করে ময়শ্চারাইজার মাখুন, দিনে অন্তত একবার ম্যাটিফায়িং টোনার দিয়ে মুখ মুছে নিন। ল্যাকমে অ্যাবসলিউট পোর ফিক্স টোনার/Lakme Absolute Pore Fix Toner ব্যবহার করতে পারেন। উইচ হ্যাজেলের মতো প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্টে ভরপুর এই টোনার চিনি খাওয়ার কারণে ত্বকের অতিরিক্ত তেলাভাবকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
মূল ফোটো সৌজন্য: @kritisanon
Written by Manisha Dasgupta on 18th Nov 2020