চুল রং করলে তার সঙ্গে চুলের ক্ষতির ব্যাপারটাও জড়িত থাকে। যতই আগে থেকে প্রস্তুতি নিন, বা উন্নত মানের প্রডাক্ট বাছাই করুন, কোনও কিছুতেই সম্পূর্ণ নিরাপদ হেয়ার কালার আপনি পাবেন না। চুলের রঙে অ্যামোনিয়া থাকে যা চুলের কিউটিকলগুলোকে খুলে দেয় যাতে রং ভেতরে ঢুকতে পারে। এর ফলে চুলের টেক্সচারে পরিবর্তন আসতে পারে, চুল শুষ্কও হয়ে যেতে পারে। আর যে সব হেয়ার ডাই অ্যামোনিয়া মুক্ত বলে দাবি করা হয়, সে সব রং পরিমাণে অনেক বেশি ব্যবহার করতে হয়, চুলে রাখতেও হয় তুলনামূলক দীর্ঘ সময় ধরে, যা থেকেও চুলের ক্ষতি হতে পারে।
ফলে এটা বলাই যায়, যতই সাবধানতা অবলম্বন করুন না কেন, চুল রং করার সেশনের পরে আপনার চুল ক্ষতিগ্রস্ত হবেই। তবে তার জন্য ভয় পাওয়ার দরকার নেই। রং করার পরবর্তী সময়ে আপনি কীভাবে চুলের যত্ন নিচ্ছেন তার ওপরেই নির্ভর করবে আপনার চুলের অবস্থা কেমন থাকবে। চুল শুষ্ক রুক্ষ জটপাকানো হয়ে যাবে, নাকি মনের ইচ্ছে পূরণ করে ঝলমলে উজ্জ্বল থাকবে, তার সবটাই নির্ভর করে পোস্ট-কালারিং হেয়ার কেয়ারের ওপর। রং করা চুলের কীভাবে যত্ন নেবেন, সে সম্পর্কে রইল কিছু টিপস:
- 01. সালফেটহীন প্রডাক্ট ব্যবহার করুন
- 02. কর্কশ উপাদান থেকে চুল বাঁচিয়ে রাখুন
- 03. প্রতিদিনের রুটিনে রাখুন ড্যামেজ রিপেয়ার
- 04. ঘন ঘন চুল ধোবেন না
- 05. রং করা চুল বাঁচিয়ে রাখুন উত্তাপ থেকে
01. সালফেটহীন প্রডাক্ট ব্যবহার করুন

চুল পরিষ্কার করার জন্য শ্যাম্পুতে সালফেট যোগ করা হয়। রং করা চুলে সালফেট খুবই কর্কশ হতে পারে। সালফেট চুল থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়, রং দ্রুত হালকা হয়ে যায়, চুলও নিষ্প্রাণ দেখায়। তাই বেছে নিন ট্রেসমে প্রো প্রোটেক্ট সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু/ TRESemmé Pro Protect Sulphate Free Shampoo আর কন্ডিশনার। কালার ট্রিটেড চুলের জন্য এটি অন্যতম সেরা শ্যাম্পু কারণ এতে কোনও সালফেট নেই। অর্থাৎ এই শ্যাম্পু আপনার চুল পরিষ্কার করবে চুল শুকনো না করেই এবং রংও বজায় থাকবে দীর্ঘদিন।
02. কর্কশ উপাদান থেকে চুল বাঁচিয়ে রাখুন

চুলের পক্ষে এমনিতেই চড়া রোদ খারাপ, তার ওপরে চুল রং করা থাকলে তো কথাই নেই! রোদের অতিবেগুনি রশ্মি হেয়ার ডাইয়ের কেমিক্যাল বন্ড ভেঙে দেয়, এবং চুল থেকে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা আর পুষ্টির পাশাপাশি রংও শুষে নেয়। দূষণ আর ক্ষারযুক্ত জল থেকেও চুল বাঁচিয়ে রাখতে হবে কারণ এ সব কারণেও চুলের মান ক্রমশ খারাপ হয়ে যায়।
03. প্রতিদিনের রুটিনে রাখুন ড্যামেজ রিপেয়ার

চুল রং করার পর 72 ঘণ্টার মধ্যে ক্ষতি মেরামত করার প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া উচিত। যত তাড়াতাড়ি এই ড্যামেজ রিপেয়ার শুরু করবেন , ততই চুল শুষ্ক আর রুক্ষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করুন ডাভ ইনটেন্স ড্যামেজ রিপেয়ার মাস্ক/ Dove Intense Damage Repair Mask -এর মতো ডিপ কন্ডিশনিং ও রিপেয়ারিং হেয়ার মাস্ক। এতে রয়েছে এক-চতুর্থাংশ ময়শ্চারাইজিং ক্রিম ও কেরাটিন অ্যাক্টিভ যা চুলে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায় এবং ক্ষতি মেরামত করে চুলে ফেরায় নতুন জীবন। চুলে লাগিয়ে তিন থেকে পাঁচ মিনিট রাখুন, তারপর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার কি দু'বার করলে আপনার রং করা চুল পাবে প্রয়োজনীয় যত্ন ও শুশ্রূষা।
04. ঘন ঘন চুল ধোবেন না

চুল রং করার পর প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করবেন না, তাতে চুলের খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। আপনার স্ক্যাল্প যে প্রাকৃতিক তেল তৈরি করে, তা চুলের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছে গিয়ে স্বাভাবিকভাবে ক্ষতি মেরামত করে চুল সুস্থ রাখে। এই প্রাকৃতিক তেল চুলে না থাকলে চুলের রং যেমন দ্রুত ফিকে হয়ে যায়, তেমনি চুল রুক্ষ আর বিবর্ণ হয়ে পড়ে। তাই সপ্তাহে দু'-তিনবারের বেশি শ্যাম্পু করবেন না, আর স্ক্যাল্পের তেল পুরো চুলে যাতে ছড়িয়ে যায় তাই রোজ অবশ্যই চুল আঁচড়াবেন।
05. রং করা চুল বাঁচিয়ে রাখুন উত্তাপ থেকে

হিট ড্যামেজ হল কেমিক্যাল ড্যামেজের মতোই, কারণ এ ক্ষেত্রেও চুলের প্রোটিন বন্ড ভেঙে যায় এবং চুল শুষ্ক আর রুক্ষ হয়ে পড়ে। তাই হিট স্টাইলিং যথাসম্ভব কম করুন, এবং যখনই হিট টুল ব্যবহার করবেন তার আগে চুলে ট্রেসমে কেরাটিন স্মুদ হিট প্রোটেকশন স্প্রে/ TRESemmé Keratin Smooth Heat Protection Spray -র মতো সুরক্ষাদায়ক স্প্রে লাগিয়ে নিন। এই স্প্রে লাগালে চুলে তাপজনিত ক্ষতি কম হবে। এই স্প্রে আপনার চুল 450 ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত তাপ থেকে সুরক্ষিত রাখে এবং একই সঙ্গে রুক্ষতা প্রতিরোধ করে চুলে এনে দেয় ঝলমলেভাব।
Written by Manisha Dasgupta on Aug 04, 2021
Author at BeBeautiful.