বাথরুমের মেঝেতে গোছা গোছা চুল, চিরুনিতেও তাই! এমন হলে শুধু মন খারাপ নয়, ভয় হওয়াও স্বাভাবিক! তবে অতটা ভয় পাওয়ারও দরকার নেই, সুখের কথা হল, চুলের বৃদ্ধির চক্র অনুসারে প্রতিদিন 50 থেকে 100 টা পর্যন্ত চুল ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু চুল যদি তার চেয়েও বেশি উঠতে শুরু করে আর মাথায় জায়গায় জায়গায় টাকের মতো দেখতে পান, তা হলে সত্যিই চিন্তার কথা! কারণ এটা স্বাভাবিক নয়। আপনার চুলের যে বিশেষ যত্ন দরকার, তারই ইঙ্গিত এটি।
চুল ঝরে যাওয়ার প্রথম ও প্রধান কারণ লুকিয়ে আছে জিনে। জিনঘটিত কারণে আপনার চুল উঠে যাওয়া ও টাক পড়ার ধাত থাকতে পারে। এ ছাড়া দূষণ, ভিটামিনের অভাব, হিট-স্টাইলিং টুলের অতিরিক্ত ব্যবহার, খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম ও ক্র্যাশ ডায়েট এবং কড়া কেমিক্যাল ট্রিটমেন্টের কারণেও চুল উঠে যেতে পারে। প্রশ্ন হল, কীভাবে মুক্তি পাবেন এই ক্রনিক চুল উঠে যাওয়ার সমস্যা থেকে? চুল ওঠার সমস্যা সমূলে সমাধানের 5টি অব্যর্থ উপায় জানাচ্ছি আমরা।
- জেনে নিন চুলের স্টাইল করার নতুন কৌশল
- প্রোটিনে ভরপুর ডায়েট খান
- স্ক্যাল্পের যত্ন নিতে নিয়মিত মাসাজ করুন
- কড়া রাসায়নিকমুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
- নিয়মিত ব্যায়াম... স্ট্রেস কমানোর উপায়
জেনে নিন চুলের স্টাইল করার নতুন কৌশল

চুল ঝরা ঠেকাতে চাইলে দুটি বিষয়ে সাবধান হতে হবে আপনাকে - এক, হিট-স্টাইলিং টুল অর্থাৎ তাপ দিয়ে চুল স্টাইল করা, আর দুই, সামগ্রিকভাবে চুলের স্টাইলিং। প্রতিদিন স্ট্রেটনার আর কার্লিং আয়রন ব্যবহার করলে চুলের স্বাস্থ্যের প্রচণ্ড ক্ষতি হয়ে যাবে! অতিরিক্ত তাপ লাগলে চুল ভঙ্গুর হয়ে যায়, ফলে সহজেই উঠে আসে। তাই হিট-স্টাইলিং টুলসের ব্যবহারে রাশ টানুন অথবা তাপ একদম কমিয়ে দিন।
এমনিতেও হেয়ারস্টাইল করার সময় খুব টাইট করে খোঁপা, বিনুনি বা পনিটেল বাঁধবেন না, তাতে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে গিয়ে আরও চুল উঠতে শুরু করবে।
প্রোটিনে ভরপুর ডায়েট খান

আপনি যা খান তার একটা বিরাট প্রভাব আপনার চুলের স্বাস্থ্যের উপর পড়ে। যেহেতু আপনার চুলের 85 শতাংশই প্রোটিন, তাই প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিন রাখতেই হবে। চর্বিহীন মাংস আর ডিম তো বটেই, থাকতে হবে দই আর ছানাও। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে আপনার চুলও থাকবে মজবুত, ঘন আর স্বাস্থ্য-ঝলমল।
স্ক্যাল্পের যত্ন নিতে নিয়মিত মাসাজ করুন

নিয়মিত স্ক্যাল্পে মাসাজ করলে শুধু যে মাথায় রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় তাই নয়, এতে আপনার চুল আর স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্যও উন্নত হয় আর চুলের গোড়া আরও মজবুত হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, স্ক্যাল্প মাসাজের ফলে চুলের বৃদ্ধিও ভালো হয়।
চুল ওঠার সবচেয়ে বড়ো কারণ হল স্ট্রেস বা মানসিক চাপ। মাথায় মাসাজ নিলে মানসিক চাপ কমে আপনি রিল্যাক্স করতে পারেন, তাতে চুল ওঠার সমস্যাও কমে যায়। চুল আর স্ক্যাল্পের যত্ন নেওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হল শ্যাম্পু করার আগে মাথায় হালকা গরম তেল মাসাজ করা। আঙুল দিয়ে চুল খুব হালকা করে টানুন। এমনভাবে টানবেন যাতে টানটা অনুভব করবেন অথচ ব্যথা লাগবে না। তারপর ধীরে ধীরে ওই অংশের স্ক্যাল্পে মাসাজ করুন। এভাবে পুরো চুল আর স্ক্যাল্প মাসাজ করুন।
কড়া রাসায়নিকমুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন

যে সব শ্যাম্পু বা কন্ডিশনারে সোডিয়াম লরিল সালফেট রয়েছে, তা একদম চলবে না। এই সব শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার চুলের ফলিকলে জ্বালা করতে পারে, এমনকী, ফলিকল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, পুড়েও যেতে পারে। তাই সালফেটহীন ফরমুলাই আপনার চুলের পক্ষে সবচেয়ে ভালো, বিশেষ করে আপনার যদি চুল ওঠার সমস্যা থাকে। আমাদের পরামর্শ মেনে ট্রেসেমি হেয়ার ফল ডিফেন্স শ্যাম্পু/ Tresemme Hair Fall Defense Shampoo ব্যবহার করুন। এই শ্যাম্পু আপনার চুল মজবুত করে তুলে চুল ওঠা বন্ধ করে। এই শ্যাম্পুতে কেরাটিন প্রোটিন রয়েছে, তাই এই শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুলে চুল আর্দ্রতা পায়, চুলের নমনীয়তাও বৃদ্ধি পায়। প্রতিবার শ্যাম্পু করার পর ট্রেসেমি হেয়ার ফল ডিফেন্স কন্ডিশনার/ Tresemme Hair Fall Defense Conditioner চুলে লাগান, এই কন্ডিশনার আপনার চুল কোমল, মসৃণ রাখে, চুল বশে রাখাও সহজ হয়।
নিয়মিত ব্যায়াম... স্ট্রেস কমানোর উপায়

মাঝেমাঝে চুল ওঠা কমাতে হলে আপনাকে শুধু মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে। এপিনেফ্রিন আর কর্টিসলের মতো স্ট্রেস হরমোন আপনার স্বাভাবিক চুলের বৃদ্ধিকে ব্যহত করতে পারে। তাই চাপমুক্ত থাকতে আপনাকে নিয়মিত ব্যায়ামের শরণাপন্ন হতে হবে।
দৌড়োনো, জগিং, ধ্যান করার মধ্যে দিয়ে মানসিক চাপ কমাতে পারেন, অথবা নাচ বা জুম্বা ক্লাসেও ভর্তি হতে পারেন। যা যা আপনার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে, তার সব কিছুই আপনার চুলের পক্ষে ভালো।
Written by Manisha Dasgupta on 13th Jul 2020