পিসিওএস জনিত ত্বকের চুলকানি আর প্রদাহ কমাবেন কী করে, জানাচ্ছেন ত্বক বিশেষজ্ঞ

Written by Manisha Dasgupta16th Mar 2021
পিসিওএস জনিত ত্বকের চুলকানি আর প্রদাহ কমাবেন কী করে, জানাচ্ছেন ত্বক বিশেষজ্ঞ

পিসিওএস, অর্থাৎ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম। এই সমস্যায় আজকাল অনেক মেয়েই ভুগছেন। পিসিওএসের প্রথম প্রভাবটা পড়ে ঋতুস্রাবের ওপর, পিরিয়ড অনিয়মিত হয়, পরিমাণেও হেরফের থাকে। কিন্তু জানেন কি, আপনার ত্বক আর চুলের ওপরেও পিসিওএস দারুণ প্রভাব ফেলতে পারে? কারণ হরমোনের ভারসাম্যের অভাবে শরীরে একাধিক পরিবর্তন হয়, যা থেকে ত্বকের শুষ্কতা, প্রদাহ, চুলকানি এবং

চুল ওঠার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। পিসিওএস কীভাবে ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলে এবং পিসিওএস জনিত ত্বকের শুষ্কতা আর খসখসেভাব কীভাবে ঠেকানো সম্ভব জানতে আমরা কথা বলেছিলাম ত্বক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। ডার্মাটোলজিস্ট ডক্টর মৃণাল শাহ মোদি আপনাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন।

শুরু করার আগে আসুন জেনে নিই কিছু প্রাথমিক তথ্য...

 

পিসিওএস কী এবং কাদের এই রোগ হতে পারে?

পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে ডক্টর মৃণালের পরামর্শ:

পিসিওএস এমন একটি শারীরিক সমস্যা যা প্রতি 10 জন সন্তানধারণে সক্ষম মেয়েদের একজনের মধ্যে দেখা যায়। এই সমস্যা হলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যে তারতম্য দেখা দেয় এবং পিরিয়ড অনিয়মিত বা দীর্ঘায়িত হয়ে পড়ে। পুরুষ হরমোনের (অ্যান্ড্রোজেন) পরিমাণও অনেক বেড়ে যায়। মেয়েদের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব দেখা দেওয়ার একটা বড় কারণ পিসিওএস।

 

পিসিওএস ত্বকে প্রভাব ফেলে কীভাবে?

পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে ডক্টর মৃণালের পরামর্শ:

ডক্টর মৃণালের মতে, "পিসিওএস নানাভাবে ত্বকে প্রভাব ফেলতে পারে। সবচেয়ে সাধারণ যে উপসর্গ সেটি হল চিবুক, গাল আর চোয়ালে অবাঞ্ছিত রোম দেখা দেওয়া।

বুকে আর পেটেও রোমের ঘনত্ব বাড়তে পারে। তা ছাড়া গলা ও বাহুমূলের ত্বক কালো হয়ে যায় যার পারিভাষিক নাম অ্যাকান্থোসিস নাইগ্রিকানস। ত্বকে চুলকানি আর খুসকির আধিক্যও দেখা যায়।" পিসিওএস এবং তার কারণে ত্বকের শুষ্কতা শীতের দিনে বেশি হয়, কারণ চরম আবহাওয়ায় ত্বকের শুষ্কতা আর চুলকানি, দুইই বেড়ে যায়।

শীতের দিনে বা ঠান্ডার সময় পিসিওএস জনিত ত্বকের প্রদাহ আর চুলকানি ঠেকাতে কিছু পদক্ষেপ নিন:

 

হাইড্রেটিং ময়শ্চারাইজার মাখুন

পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে ডক্টর মৃণালের পরামর্শ:

পিসিওএসের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হল ত্বকের শুষ্কতা, আর হাতের কাছে সারাক্ষণ ময়শ্চারাইজার রাখাটাই এই সমস্যা মোকাবিলা করার সবচেয়ে ভালো উপায়। "পুষ্টিকর ও আর্দ্রতাগুণ যুক্ত কোমল ক্লেনজার দিয়ে দিনে অন্তত দু'বার মুখ ধুয়ে ফেলুন। তারপর হাইড্রেটিং ময়শ্চারাইজার মেখে নিন যাতে পিসিওএস জনিত ত্বকের শুষ্কতা কমে," বলছেন ডক্টর শাহ। স্নানের পর আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বক কোমল, টানটান, চুলকানিহীন রাখতে বডি লোশন ব্যবহার করাও খুব প্রয়োজন। আপনার ত্বক স্পর্শকাতর হলে চড়া গন্ধ বা এসেনশিয়াল অয়েল যুক্ত ময়শ্চারাইজার মাখবেন না, তাতে ত্বকে আরও জ্বালা আর অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।

 

01. হাইড্রেটিং ময়শ্চারাইজার মাখুন

পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে ডক্টর মৃণালের পরামর্শ:

পিসিওএসের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হল ত্বকের শুষ্কতা, আর হাতের কাছে সারাক্ষণ ময়শ্চারাইজার রাখাটাই এই সমস্যা মোকাবিলা করার সবচেয়ে ভালো উপায়। "পুষ্টিকর ও আর্দ্রতাগুণ যুক্ত কোমল ক্লেনজার দিয়ে দিনে অন্তত দু'বার মুখ ধুয়ে ফেলুন। তারপর হাইড্রেটিং ময়শ্চারাইজার মেখে নিন যাতে পিসিওএস জনিত ত্বকের শুষ্কতা কমে," বলছেন ডক্টর শাহ। স্নানের পর আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বক কোমল, টানটান, চুলকানিহীন রাখতে বডি লোশন ব্যবহার করাও খুব প্রয়োজন। আপনার ত্বক স্পর্শকাতর হলে চড়া গন্ধ বা এসেনশিয়াল অয়েল যুক্ত ময়শ্চারাইজার মাখবেন না, তাতে ত্বকে আরও জ্বালা আর অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।

 

02. ঠান্ডা জলে স্নান করুন

পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে ডক্টর মৃণালের পরামর্শ:

প্রতিদিন গরম জলে স্নান করলে ত্বকের ক্ষতি হয়। গরম জল ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট করে দেয়, ফলে ত্বক প্রচণ্ড শুকনো হয়ে যায়, আর চুলকানি আরও বাড়ে। ঠান্ডা জল অথবা ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করুন। একান্তই যদি গরম জলে স্নান করতে হয়, তা হলে অল্প সময় স্নান করুন (10 মিনিটের বেশি নয়) এবং স্নান হয়ে গেলে তৎক্ষণাৎ ভালোভাবে ময়শ্চারাইজার মেখে নিন।

 

03. ব্রণর ব্যাপারে সচেতন থাকুন

পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে ডক্টর মৃণালের পরামর্শ:

ত্বক শুকনো আর চুলকোচ্ছে বলেই আপনার ব্রণ হবে না ভাবলে বিলকুল ভুল ভেবেছেন! ত্বক শুষ্ক হলে আর্দ্রতার অভাব পূরণের জন্য অনেক বেশি করে তেল উৎপাদন করতে থাকে, ফলে রোমছিদ্র বন্ধ হয়ে গিয়ে ব্রণ বেরোয়। এই সমস্যা মোকাবিলার সবচেয়ে ভালো উপায় হল নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার করা, এক্সফোলিয়েট করা ও ময়শ্চারাইজার মাখা। একদিনও যেন এই রুটিন বাদ না যায়! ডক্টর মৃণাল বলছেন, "ত্বক বেশি তেলতেলে হলে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড যুক্ত ক্লেনজার ব্যবহার করুন। তাতে অতিরিক্ত সেবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে থাকে, পাশাপাশি ব্রণ শুকিয়ে যায় এবং ভবিষ্যতে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কাও কমে।"

 

04. সার্বিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখুন পিসিওএস

পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে ডক্টর মৃণালের পরামর্শ:

পিসিওএসের কোনও চিকিৎসা নেই, কিন্তু উপসর্গগুলো সামলানোর জন্য নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ওষুধপত্র খাওয়ার পাশাপাশি দৌড়ঝাঁপের মধ্যে দিয়ে জীবন কাটান, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং সুষম পুষ্টিকর খাবার খান। জীবনযাত্রায় এ সব ছোট ছোট পরিবর্তন আনতে পারলেই আপনার হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে, পিসিওএসের উপসর্গও থাকবে নিয়ন্ত্রণে!

 

05. ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন

পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে ডক্টর মৃণালের পরামর্শ:

ওপরে বলা সবক'টা নিয়ম মেনেও যদি উপকার না পান, তা হলে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন। তিনি সঠিক ক্রিম ও ওষুধের সন্ধান দিতে পারবেন, আপনিও সমস্যা মুক্ত হবেন!

 

পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে ডক্টর মৃণালের পরামর্শ:

পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে ডক্টর মৃণালের পরামর্শ:

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন, বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেলুন।

তাতে শরীরে অ্যান্ড্রোজেন বা পুরুষ হরমোনের পরিমাণ কমে যাবে, ফলে পিসিওএসের উপসর্গও কমবে।

রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট, চিনি, তৈলাক্ত ও প্রসেসড খাবার খাবেন না।

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন।

সুষম স্বাস্থ্যকর খাবার খান, তাতে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে সবুজ শাকসবজি আর ফল থাকে!

Manisha Dasgupta

Written by

Author at BeBeautiful.
1653 views

Shop This Story

Looking for something else