শুকনো, নিষ্প্রভ, আর্দ্রতাহীন ত্বক নিয়ে সারাজীবন ধরে যদি নাজেহাল হয়ে থাকেন, তা হলে এই লেখা আপনার জন্য। নানারকমের অজস্র প্রডাক্ট মুখে মাখা ছাড়াও ত্বকের হাল ফেরানোর একটা উপায় আছে। জাপানি রূপচর্চায় যে সব কৌশল কাজে লাগানো হয়, তার মধ্যেই একটা হল ডাবল-ময়শ্চারাইজিং। নাম যেমন সহজ, তেমনি এটির পদ্ধতিও সহজ। আসুন দেখে নেওয়া যাক।
ডাবল-ময়শ্চারাইজিং কি সত্যি কাজ করে?

শুষ্ক আর পরিণত ত্বকের জন্য এই পদ্ধতিটি উপযোগী। আপনার ত্বকের নিয়মিত ময়শ্চারাইজার দরকার। কিন্তু ত্বকে শুধু ময়শ্চারাইজার মাসাজ করা ছাড়া আর কী করা যায়, যাতে শুষ্কতা, প্রদাহ আর স্পর্শকাতরতার প্রভাব এড়াতে পারবে ত্বক?
এই নিয়ম অনুসারে, ত্বকে আপনি যত বেশি ময়শ্চারাইজার মাখতে পারবেন (তবে তার মানে ত্বকে গাদাগাদা প্রডাক্ট মাখবেন তা নয় - এই নিয়ম মানার একটা কৌশল রয়েছে), ত্বক তত বেশি সেই ময়শ্চারাইজার ধরে রাখতে পারবে, আর মুখে ভেতর থেকে ফুটে উঠবে দীপ্তি। ডাবল-ময়শ্চারাইজার ঠিক এই কাজটাই করে।
ভেবে দেখলে বুঝবেন, আমাদের ত্বকের একদম বাইরের স্তরের একটা নিজস্ব ডাবল-ময়শ্চারাইজিং পদ্ধতি রয়েছে। আমাদের কেরাটিন কোষের প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজিং ফ্যাক্টর পরিবেশ থেকে আর্দ্রতা ত্বকে শুষে নেয়; অন্যদিকে ত্বকের এই স্তরেরই ইন্টারসেলুলার লিপিড ত্বকে শুষে যাওয়া ময়শ্চারকে ফের বাতাসে মিশে যেতে দেয় না। জাপানি এই সৌন্দর্যচর্চার পদ্ধতিটি আমাদের ত্বকের প্রাকৃতিক কর্মপদ্ধতির সঙ্গে সাযুজ্য বজায় রেখে কাজ করে।
কীভাবে ডাবল-ময়শ্চারাইজিং করতে হয়?

মুখে পরপর দু' লেয়ার সাধারণ ময়শ্চারাইজার মেখে নিলেই কিন্তু ডাবল-ময়শ্চারাইজিং করা হল না! প্রথমে ত্বকে এমন একটি ময়শ্চারাইজিং লোশন লাগাতে হবে যা হিউমেকট্যান্ট হিসেবে কাজ করে - অর্থাৎ পরিবেশ থেকে আর্দ্রতা ত্বকে টেনে নিয়ে তা ত্বকের বাইরের স্তরটিকে আর্দ্র রাখে। হ্যালুরনিক অ্যাসিড, সেরামাইড আর গ্লিসারিন হল হিউমেকট্যান্টের উদাহরণ। এবং তারপর দ্বিতীয় ধাপে ইমালশন লাগাতে হবে। তেলযুক্ত এই প্রডাক্টটি অনেকটা আমাদের লিপিডের মতো যা আর্দ্রতাকে ত্বকের বাইরের স্তরে আবদ্ধ রাখে, বাতাসে উবে যেতে দেয় না।
ত্বক স্বাভাবিক নিয়মে প্রথমে পরিষ্কার করে টোনার লাগিয়ে নিন। তারপর সিরাম লাগান। এরপর ত্বকে প্রথমে হিউমেকট্যান্ট লাগান। তারপর মুখে মেখে নিন ইমালশন। একেবারে শেষ ধাপে সানস্ক্রিন মেখে নিন। বাইরের আবহাওয়া যেমনই হোক না কেন, সানস্ক্রিন মাখতে ভুলবেন না।
Written by Manisha Dasgupta on 17th Dec 2021