জিনসেংয়ের নাম শুনেছেন? শোনেননি? তা হলে আসুন, এই শক্তিশালী ভেষজটির সঙ্গে আপনার আলাপ করিয়ে দিই। কারণ কন্দজাতীয় এই ভেষজের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অসংখ্য অবাক করা গুণ যা ত্বকের পক্ষে দারুণ উপকারী! আর একটা তথ্য দিই! অনেকটা মানুষের মতো আকারের (চট করে দেখলে মনে হয় পা গজিয়েছে) এই শেকড়টি কোরিয়ার রূপচর্চা পদ্ধতিতে অত্যন্ত জনপ্রিয়! কথিত আছে, 1500 শতকে হাওয়াং জিনি নামে এক মহিলা, যিনি জোসিওন রাজবংশের অন্যতম রূপসী নারী হিসেবেও পরিচিত, তিনি নিজের ত্বক পরিচর্যার দৈনন্দিন রুটিনে ব্যবহার করতেন জিনসেং। ফলে কোরিয়ার মেয়েরা নিজেদের রূপচর্চায় এই শেকড়টি অন্তর্ভুক্ত করেন। বর্তমানে আমরা এই উপাদানটির ওপর অনেক গবেষণা চালিয়েছি, এবং বুঝেছি কেন সকলে নিজেদের বিউটি রুটিনে চা আর মধু ছাড়াও জিনসেং যোগ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন - জিনসেং আসলে ত্বকে নিমেষে জেল্লা এনে দিতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল আর অ্যান্টিঅক্সিডান্ট রয়েছে যা ত্বককে পুষ্টি জোগায়। ফলে বুঝতেই পারছেন, জিনসেং নেহাতই একটা পানীয় নয়, এর আরও নানা গুণ রয়েছে!
জিনসেং কী?

কোরিয়ার বিউটি রুটিনের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আগে থেকেই এশিয়ান জিনসেং পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশ সহ চিন, কোরিয়া ও সাইবেরিয়ার সনাতনী চিকিৎসা শাস্ত্রে ব্যবহৃত হত একাধিক কারণে। জিনসেং উত্তেজক পানীয় হিসেবে স্বীকৃত ছিল, পাশাপাশি এটি আফ্রোডিসিয়াক এবং ডায়াবেটিস কমাতে সক্ষম। তার সঙ্গে ফোঁড়া, ঘা, ফুলে যাওয়ার মতো নানা ত্বকের সমস্যার চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হত। ক্লান্তি আর মনের ওপর চাপ কমাতেও জিনসেংয়ের ব্যবহার ছিল। সাধারণত গুঁড়ো করার মতো পর্যায়ে পৌঁছোনোর মোটামুটি ছ'বছর আগে জিনসেং তুলে ফেলা হয়। দেখা যাক ত্বকের জন্য জিনসেংয়ের উপকারিতাগুলো কী কী!
ত্বকে জিনসেংয়ের উপকারিতা

1. বয়সের ছাপ কমায়
জিনসেং শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ায় এবং ত্বকে রক্ত সংবহন উন্নত করে। এই দুটি বিষয়ই বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। এই দুটি বিষয় কোলাজেনের সংশ্লেষ বাড়ায় এবং ফলত ত্বক মসৃণ ও টানটান করে তোলে। ত্বকে সূক্ষ্ম রেখা, বলিরেখা সহ বয়সের অন্যান্য চিহ্ন দেখা দিতে পারে না। যেহেতু এই উপাদানটি অ্যান্টিঅক্সিডান্টে ভরপুর, তাই এটি পরিবেশের ক্ষতিকর উপাদানের হাত থেকেও ত্বককে রক্ষা করে।
2. গায়ের রং উজ্জ্বল করে
জিনসেং ত্বকের নিষ্প্রাণভাব কাটিয়ে তুলে জেল্লা ফিরিয়ে দেয়। এই উপাদানটিতে কফির মতো এনার্জিদায়ক গুণ রয়েছে যা থেকে ত্বক জেল্লাদার হয়ে ওঠে। ত্বকের মেলানিন উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে এটি হাইপারপিগমেন্টেশনও কমায়। পরিবেশের দূষণ ত্বকের রোমছিদ্র বন্ধ করে দেয়, মেলানোসাইটের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে যা থেকে ত্বকে বাদামি ছিটের মতো দাগ তৈরি হয়।। জিনসেংয়ের অ্যান্টিঅক্সিডান্ট ত্বককে পরিবেশের এই দূষণের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখে।
3. প্রদাহ কমায়
জিনসেংয়ের অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ রয়েছে। এটি ত্বকের লালচেভাব, ফোলাভাব, জ্বালা কমাতে পারে, এবং ব্রণ ও সোরিয়াসিসের উপসর্গ থেকেও রেহাই দেয়। রক্ত সংবহনে সমস্যা থাকলে ফোলাভাব দেখা দেয় এবং সে ক্ষেত্রে জিনসেং ঠিক কী ভূমিকা পালন করে, তা আমাদের জানা।
4. তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে
মনে করা হয়, এই কন্দজাতীয় ভেষজটির জল ধরে রাখার ক্ষমতা এবং অ্যান্টিঅক্সিডান্টের গুণ ত্বকের তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভা
Written by Manisha Dasgupta on 2nd Mar 2022