শীত আসা মানেই রংবেরঙের স্টাইলিশ সব পোশাক পরা আর আরামদায়ক বিছানায় গুটিসুটি মেরে বসে গরম চকোলেটের কাপে চুমুক দেওয়া! কিন্তু এ সব আরামের দিক বাদ দিলে শীতের কিছু সমস্যার দিকও আছে, যেমন আপনার চুলের পক্ষে এই মরশুমটা কিন্তু দারুণ ক্ষতিকর! এমনিতে প্রতিদিন 50-100টা করে চুল ওঠা স্বাভাবিক হলেও, মরশুমের কারণে চুল তার বেশিও উঠতে পারে। বিশেষ করে শীত এলেই চুল ওঠার পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়, যা বেশ ভয়ের কারণও হয়ে উঠতে পারে। বাতাসে তাপমাত্রা আর আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে আপনার চুল থেকে প্রয়োজনীয় ময়শ্চার নষ্ট হয়ে যায়, ফলে চুল হয়ে ওঠে শুকনো, ভঙ্গুর, উঠেও যায় গোছা গোছা। শীতকালে চুল কেন বেশি পড়ে রইল তার পাঁচটি কারণ আর সেই সঙ্গে কী করলে চুল ওঠা ঠেকানো যাবে, তার হদিশ।
- 01. ঠান্ডা বাতাস চুলের সব আর্দ্রতা শুষে নেয়
- 02. উলের টুপি বা স্কার্ফ থেকে বেশি ক্ষতি হয়
- 03. গরম জলে স্নান করলে চুল দুর্বল হয়ে যায়
- 04. ক্ষতি হয় চুলের স্টাইলিং রুটিন থেকেও
- 05. ক্ষতি অগ্রাহ্য করার প্রবণতা
01. ঠান্ডা বাতাস চুলের সব আর্দ্রতা শুষে নেয়

শীতকালে বাড়ির বাইরের বাতাসে আর্দ্রতা আর জলীয় বাষ্প বলতে গেলে থাকেই না! ঠান্ডা বাতাসে চুল একটু খাড়া হয়ে যায়, ফলে চুল থেকে আর্দ্রতা সহজেই উবে যায়। চুলে আর্দ্রতা না থাকলে তা ভেঙে ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি থাকে। সে জন্যই রাতে শুতে যাওয়ার সময় চুল আঁচড়াতে গিয়ে গোছা গোছা চুল উঠে আসে।
02. উলের টুপি বা স্কার্ফ থেকে বেশি ক্ষতি হয়

উলের টুপি, মাফলার বা সুতির স্কার্ফ আপনার মাথায় ঠান্ডা হাওয়া লাগতে দেয় না বটে, কিন্তু এ সব কাপড়ের সঙ্গে চুলের ঘষা লেগে চুল উঠে যায়। সারাদিন মাথা ঢেকে রাখলে চুল শ্বাস নিতে পারে না, ফলে চুল থেকে আর্দ্রতা উবে যায়। এই সমস্যা এড়াতে সিল্কের স্কার্ফ আর ব্লেন্ডেড উলের ফ্যাব্রিক ব্যবহার করুন। এই উপাদানগুলি চুলের পক্ষে তুলনামূলকভাবে কোমল এবং চুলে ঘষা লাগা আর ভেঙে ঝরে যাওয়ার সমস্যা রুখতে পারে।
03. গরম জলে স্নান করলে চুল দুর্বল হয়ে যায়

হিউমিডিফায়ার দিয়ে চুলে আর্দ্রতা বাড়িয়ে তোলা গেলেও গরম জলে চুল ধোওয়া একদম উচিত না! গরম জল চুলের কিউটিকল খুলে দেয়, ফলে ময়শ্চার উবে গিয়ে চুল জলশূন্য হয়ে যায় এবং চুলে কোনও রং করা থাকলে তাও দ্রুত ফিকে হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে সবসময় ঈষদুষ্ণ জলে চুল ধোবেন এবং একদম শেষে ঠান্ডা জলে চুল ধুয়ে নেবেন। ঠান্ডা জল চুলের কিউটিকল ফের বন্ধ করে দেয়, ফলে স্ক্যাল্পের প্রাকৃতিক তেল সুরক্ষিত থাকে, আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং চুলে আসে স্বাস্থ্যকর চকচকেভাব। এ ছাড়া চুলে শ্যাম্পু করার সময় এমন প্রডাক্ট ব্যবহার করা উচিত যা বিশেষভাবে চুল ওঠা কমানোর জন্যই তৈরি হয়েছে। ডাভ হেয়ার ফল রেসকিউ শ্যাম্পু+কন্ডিশনার/ Dove Hair Fall Rescue Shampoo + Conditioner নিয়মিত ব্যবহার করলে 98% চুল কম ওঠে বলে জানা যায়। শ্যাম্পুর এই ফরমুলায় ¼ ময়শ্চারাইজিং মিল্ক রয়েছে, আর সঙ্গে রয়েছে নিউট্রি-লক ফাইবার অ্যাকটিভ যা প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ চুলের গভীরে আটকে রাখে এবং চুল ভেতর থেকে মজবুত করে তোলে। তাই শীতের হেয়ার কেয়ার রুটিনে অবশ্যই থাকা চাই এই প্রডাক্টটি!
04. ক্ষতি হয় চুলের স্টাইলিং রুটিন থেকেও

শীতের দিনে এমনিতেই চুলের ক্ষতি বেশি হয়; তার ওপর যদি হিট স্টাইলিং করতে যান, তা হলেই সর্বনাশ! হিট স্টাইলিং করলে চুলের কিউটিকল খুলে যায়, ড্রায়ার আর স্ট্রেটনারের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে চুল আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে জন্য যতটা সম্ভব চুলের স্বাভাবিক টেক্সচার ধরে রাখুন, আর খুব তাড়াহুড়ো না থাকলে খোলা হাওয়াতেই চুল শুকোন।
05. ক্ষতি অগ্রাহ্য করার প্রবণতা

ক্ষতিগ্রস্ত চুলের দেখভাল না করে যত ফেলে রাখবেন, পরিস্থিতি ততই খারাপ হবে। শীতে চুল নেতিয়ে পড়ে, জট লাগে বেশি। জট পাকানো চুল আঁচড়াতে গেলে টান লেগে প্রচুর পরিমাণে চুল উঠে যেতে পারে। শীতে চুল সুস্থ রাখতে আর চুল ওঠার পরিমাণ একেবারে কমিয়ে আনতে নিয়মিত চুল ছেঁটে ফেলুন।
Written by Manisha Dasgupta on Nov 26, 2021
Author at BeBeautiful.