সেমি পার্মানেন্ট মেকআপের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। মাইক্রোব্লেডিং, আইশ্যাডো এক্সটেনশন, ফিলার্স, আইলাইনার ট্যাটুর মতো নানা সেমি পার্মানেন্ট মেকআপ করাতে তাই হামেশাই ভিড় দেখা যায় পার্লারে। এ সব সেমি পার্মানেন্ট মেকআপ করানোর খরচ নামমাত্র, ঝটপট করানো হয়ে যায়, ব্যথাট্যথাও খুব একটা হয় না! সে জন্যই আজকাল বেশিরভাগ ডার্মাটোলজিস্ট ও সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞদের প্রদেয় পরিষেবার মধ্যে জায়গা করে নিচ্ছে সেমি পার্মানেন্ট মেকআপ। স্থায়ীভাবে মেকআপ করিয়ে নেওয়ার চাহিদার গ্রাফটা যে দিন দিন ঊর্ধ্বমুখী, এ থেকেই বোঝা যায়!
সেমি পার্মানেন্ট মেকআপ করানোর পেছনে নানাধরনের মানসিকতা কাজ করে। কেউ শরীরের বিশেষ অংশে রঙিন ট্যাটু করে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে চান, আবার কেউ হয়তো নিজের লুকটাকেই বদলে ফেলতে চান পুরোপুরি! যেমন লিপ ব্লাশিং-এর কথাই ধরা যাক! ঠোঁটের স্বাভাবিক রং আরও গোলাপি আর উজ্জ্বল করে তুলতে এই পদ্ধতির সাহায্য নেন মেয়েরা।
আপনিও যদি লিপ ব্লাশিং পদ্ধতিতে ঠোঁটের স্বাভাবিক রং আরও সুন্দর করে তুলতে চান, তা হলে মাথায় রাখুন কিছু জরুরি কথা।
- লিপ ব্লাশিং কাকে বলে?
- লিপ ব্লাশিং আর লিপ ট্যাটুর মধ্যে তফাত কী
- লিপ ব্লাশিং করানোর আগে যা মাথায় রাখবেন
লিপ ব্লাশিং কাকে বলে?

ফোটো সৌজন্য: @browslaves
প্রথমেই বুঝে নিন, লিপ ব্লাশিং কিন্তু একটি সেমি পার্মানেন্ট মেকআপ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একটি মেকানিকাল সূচের সাহায্যে ঠোঁটে রং ভরে দেওয়া হয়। তাতে একদিকে যেমন ঠোঁট টুসটুসে রসালো হয়ে ওঠে, তেমনি খুব সুন্দর স্বাভাবিক গোলাপি দেখায়। ঠোঁটের আউটলাইন আরও নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে এই পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়। সবচেয়ে ভালো দিক হল, এই পদ্ধতিতে ঠোঁটের রং মোটেই অতিরিক্ত লাল বা কৃত্রিম দেখায় না। লিপ ট্যাটুতে সূচ ঠোঁটের যতটা গভীরে গিয়ে কাজ করে, এ ক্ষেত্রে মোটেই ততটা নয়। ফলে যে সব অল্পবয়সী মেয়েরা ক্ষতি হয়ে যাওয়ার ভয়ে ঠোঁটে ট্যাটু গান প্রয়োগ করতে চান না, তাঁদের মধ্যে এই পদ্ধতিটি খুবই জনপ্রিয় হয়েছে।
লিপ ব্লাশিং আর লিপ ট্যাটুর মধ্যে তফাত কী

ফোটো সৌজন্য: @cdbeautynyc
অনেকেই লিপ ব্লাশিং আর লিপ ট্যাটুর মধ্যে গুলিয়ে ফেলেন। তবে দুটি পদ্ধতি একদম আলাদা! লিপ ব্লাশিংয়ের ক্ষেত্রে ঠোঁটে শেডিং বা পিক্সেলেটিং পদ্ধতিতে রঞ্জককণা ভরে দেওয়া হয়। আপনার গায়ের রঙের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই রং ভরা হয়। এ ক্ষেত্রে ঠোঁট মাত্র পাঁচ সাতদিনের মধ্যেই সেরে যায়। প্রায় দু'বছর পর্যন্ত ঠোঁটের রং নিখুঁত থাকে, কোনও রিটাচের দরকার হয় না।
লিপ ব্লাশিং করানোর আগে যা মাথায় রাখবেন

ফোটো সৌজন্য: @caras_studio
লিপ ব্লাশিং কাকে বলে তো জানলেন! এবার দেখে নিন এই পদ্ধতি করানোর আগে কী কী কথা মাথায় রাখতে হবে:
আগেই বলেছি, লিপ ব্লাশিং পদ্ধতিতে ঠোঁটে আপনি যে কোনও টিন্ট পেতে পারেন। তাই আপনার ত্বক আর চেহারার সঙ্গে কোন রং সবচেয়ে মানানসই হবে জানতে সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে অবশ্যই বিশদে পরামর্শ করবেন। বেশিরভাগ মেয়ে ত্বকের স্বাভাবিক রঙের চেয়ে এক শেড হালকা রং বেছে নেন, যাতে গাঢ় লিপস্টিক আর লিপলাইনারের রং স্পষ্ট হয়ে ফুটে বেরোয়।
শরীরে যে কোনও রং করার পদ্ধতিতেই যেমন প্রথমে জায়গাটা অবশ করে নেওয়া হয়, তেমনি এ ক্ষেত্রেও ত্বকের ওপরে একটা অবশ করার ক্রিম লাগিয়ে নেওয়া হয়। অভিজ্ঞ পেশাদারকে দিয়ে করালে কোনও ব্যথাযন্ত্রণা আপনি টের পাবেন না, বড়জোর হালকা চিনচিনে অনুভূতি হতে পারে। এই পদ্ধতির কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। শুধু ট্রিটমেন্টের পরবর্তী সাবধানতা মেনে চলবেন, ঠোঁটে হাত দেবেন না বা খোঁটাখুঁটি করবেন না।
লিপ ব্লাশিং খুবই দ্রুত করে নেওয়া যায়। পেশাদারেরা মাত্র আধঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যেই পুরো পদ্ধতিটি শেষ করেন। অবশ্য কনসাল্টেশনের জন্য বরাদ্দ সময়সীমা এর অন্তর্গত নয়। তা ছাড়া অবশ করার ক্রিম কাজ করতে এক একজনের ক্ষেত্রে এক একরকম সময় নেয়, সেটাও মাথায় রাখতে হবে।
মূল ফোটো সৌজন্য: @emrata
Written by Manisha Dasgupta on 2nd Sep 2020