ব্রণ মানে কি শুধু কিশোরবয়সের সমস্যা? একবার কুড়ির কোঠায় ঢুকে পড়তে পারলেই ব্রণ থেকে মুক্তি? এমনটা যদি ভেবে থাকেন, তা হলে এর চেয়ে ভুল ভাবনা আর নেই। ব্রণ হতে পারে যে কোনও বয়সেই, এবং অ্যাডাল্ট অ্যাকনে হানা দিতে পারে কুড়ি, তিরিশ, এমনকী চল্লিশ বা পঞ্চাশের কোঠাতেও। আর সত্যি বলতে এই বেশি বয়সে ব্রণ বা অ্যাডাল্ট অ্যাকনের উপদ্রব ক্রমশ বাড়ছে।
অ্যাডাল্ট অ্যাকনে একবার হলে সহজে যেতে চায় না, তাই এর চিকিৎসাও কঠিন। তবে যে কোনও ব্রণ যেভাবে কমাতে হয়, এ ক্ষেত্রেও সেই পথই অনুসরণ করতে হবে, অর্থাৎ ব্রেকআউটের পেছনে কারণটা খুঁজে বের করতে হবে। যাতে দেরি না করে অ্যাডাল্ট অ্যাকনের মোকাবিলা করতে পারেন, তার জন্য আমরা নিয়ে এসেছি এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য - কেন অ্যাডাল্ট অ্যাকনে হয়, আর কীভাবে তা সামাল দিতে হবে সে সব কিছু জানতে হলে পড়তে থাকুন।
- অ্যাডাল্ট অ্যাকনে সাধারণ ব্রণর চেয়ে আলাদা কেন?
- ব্রণর কারণ:
- 02. মানসিক ও শারীরিক চাপ
- 03. অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার অভ্যেস
- 04. পিসিওএস
- 05. ভুল প্রডাক্ট ব্যবহার
- অ্যাডাল্ট অ্যাকনে সামাল দেবেন কী করে
অ্যাডাল্ট অ্যাকনে সাধারণ ব্রণর চেয়ে আলাদা কেন?

অ্যাডাল্ট অ্যাকনে বা বেশি বয়সের ব্রণকে দুটো বড় শ্রেণিতে ভাগ করা যায় - প্রথমত নাগাড়ে ব্রণ বেরোনো, আর দুই, দেরিতে ব্রণ বেরোনো। নাগাড়ে যে সব ব্রণ বেরোয়, তার শুরুটা কিশোরবেলা থেকেই হতে পারে। কিন্তু দেরিতে যে সব অ্যাডাল্ট অ্যাকনে হয়, তা কিন্তু একদম হঠাৎ করেই হতে পারে, এমনকী আগে ব্রণ বেরোনোর কোনও ইতিহাস না থাকলেও। অ্যাডাল্ট অ্যাকনে থেকে ত্বকে প্রদাহ হয়, দাগ পড়ে যায়, ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। যেহেতু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের নতুন কোষ জন্মানোর গতি ধীর হয়ে যায়, তাই এই ব্রণ সারানোও কঠিন হয় এবং এ থেকে ত্বকে অকালে বয়সের দাগও পড়তে পারে। এ সব কারণে টিনএজ বয়সের ব্রণর চেয়ে অ্যাডাল্ট অ্যাকনে সারানো অনেক বেশি জটিল।
ব্রণর কারণ:

বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে হরমোনের ভারসাম্যের অভাব অ্যাডাল্ট অ্যাকনে বেরোনোর বড় আর সাধারণ কারণ। কারণ হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থেকে প্রদাহ দেখা দেয়, তা থেকে পিএইচ লেভেলে ভারসাম্যের অভাব তৈরি হয় আর ত্বকে সেবামও তৈরি হয় বেশি করে। সব মিলিয়ে ব্রণ বেরোতে শুরু করে।
02. মানসিক ও শারীরিক চাপ

শারীরিক বা মানসিক, যে কোনও ধরনের চাপেই শরীরের অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে কর্টিসল নামে এক ধরনের হরমোনের ক্ষরণ হয়। এই হরমোন শরীরের নানা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যহত করে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা, খাদ্য পরিপাকের ক্ষমতা, স্নায়ুতন্ত্রের ওপর কর্টিসলের প্রভাব পড়ে। এ ছাড়া কর্টিসলের কারণে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াও জন্মায় যা থেকে অ্যাডাল্ট অ্যাকনে হতে পারে।
03. অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার অভ্যেস

প্রাপ্তবয়সে ত্বকের বহু সমস্যার মূলেই থাকে খাওয়াদাওয়ার অভ্যেস। মশলাদার খাবার, ভাজাভুজি আর জাঙ্ক ফুডে কোনও পুষ্টিগুণ তো নেইই, বরং এ সব বেশি খেলে হজমশক্তি নষ্ট হয়ে যায়, সঙ্গে ত্বকেও ব্রণ বা অ্যাডাল্ট অ্যাকনে বেরোতে থাকে। এই সমস্যার সমাধান একটাই - স্বাস্থ্যকর, সুষম খাবার খাওয়ার অভ্যেস করুন।
04. পিসিওএস

মাঝেমাঝে শরীরের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণেও অ্যাডাল্ট অ্যাকনে হতে পারে। পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম তেমনই একটি সমস্যা। এই সমস্যা থাকলে ব্রণর পাশাপাশি অনিয়মিত ঋতুস্রাব, মুখে রোমের অতিরিক্ত বৃদ্ধি, ওজন বেড়ে যাওয়ার মতো নানা উপসর্গ দেখা দেয়, আর এ সবই হয় হরমোনের চূড়ান্ত ভারসাম্যহীনতার জন্য।
05. ভুল প্রডাক্ট ব্যবহার

অনেক সময় আমরা ভুলবশত এমন অনেক স্কিনকেয়ার বা কসমেটিক প্রডাক্ট ব্যবহার করি যা ত্বকের ধরনের সঙ্গে মানানসই নয়। এই কারণেও অ্যাডাল্ট অ্যাকনে বেরোতে পারে। আপনার ত্বক যদি তেলতেলে হয় ও তাতে ব্রণ বেরোনোর প্রবণতা থাকে, তা হলে ভারী, ঘন ক্রিমের মতো প্রডাক্ট এড়িয়ে চলুন। তাতে রোমছিদ্র বন্ধ হয়ে গিয়ে ব্রণর সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
অ্যাডাল্ট অ্যাকনে সামাল দেবেন কী করে

প্রাপ্তবয়সে যে ধরনের ব্রণ হয়, তা একবার হলে আর যেতে চায় না। ফলে এই ব্রণ নির্মূল করা খুব কঠিন। অ্যাডাল্ট অ্যাকনে হলে তা সামলানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হল তা খোঁটাখুঁটি না করা। মুখ নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করুন, তাতে ব্রণ শুকিয়ে যাওয়ার পরে কালো দাগ থাকবে না। প্রতিদিন সানস্ক্রিন মাখুন নিয়ম করে।
না হলে ফ্রি র্যাডিক্যালসের প্রকোপে ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাবে, আর সেরকম হলে হাইপারপিগমেন্টেশন (ত্বকের কালো দাগছোপ) আর প্রদাহমূলক দাগ বা ক্ষতর সমস্যা আরও জটিল হওয়ার ভয় থেকে যায়। এ ছাড়া অ্যাডাল্ট অ্যাকনে কমানোর আরও কিছু উপায় রয়েছে। প্রতিদিন ত্বক চর্চার প্রডাক্টে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড আর থাইমলের মতো অ্যাকটিভ উপাদান থাকা দরকার। এই সক্রিয় উপাদানগুলি ত্বকের মৃত কোষ এক্সফোলিয়েট করে, ব্রণর ক্ষত সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া নাশ করে এবং ধীরে ধীরে ত্বক সারিয়ে তোলে। ভাবছেন এমন প্রডাক্ট পাবেন কোথায়? বেশি খোঁজাখুঁজির দরকার নেই, ডার্মালজিকা অ্যাকটিভ ক্লিয়ারিং রেঞ্জ/ Dermalogica Active Clearing Range ব্যবহার করে দেখুন!

এই রেঞ্জে রয়েছে এজ ব্রাইট ক্লিয়ারিং সিরাম। ডার্মালজিকার অভিনব এজ ব্রাইটটিএম কমপ্লেক্স-এর সঙ্গে কিছু সক্রিয় ব্রণনিরোধী উপাদান মিশিয়ে তৈরি হয়েছে এই সিরামটি। এ ছাড়া এই রেঞ্জে রয়েছে এজ ব্রাইট স্পট ফেডার। এটি স্পট ট্রিটমেন্ট যা ব্রণ শুকিয়ে দেয় এবং ব্রণ শুকোনোর পরে ত্বকের রং কালো হতে দেয় না। সেবাম ক্লিয়ারিং মাস্ক/ Sebum Clearing Masque বাড়তি সেবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে এবং রোমছিদ্র পরিষ্কার রেখে ব্রণ বেরোনোর আশঙ্কাও কমিয়ে দেয়। এ ছাড়া এতে রয়েছে অয়েল ফ্রি ম্যাট এসপিএফ 30; এটি খুব হালকা, নন-কোমেডোজেনিক প্রডাক্ট যা রোদজনিত ক্ষতির হাত থেকে ত্বককে বাঁচিয়ে ব্রণ থেকে সুরক্ষা দেয়। ডার্মালজিকা অ্যাকটিভ ক্লিয়ারিং রেঞ্জ-এর অভিনব অ্যান্টি-এজিং গুণও রয়েছে, যা নতুন কোষ সৃষ্টিতে সাহায্য করে আর আপনার ত্বক থাকে পরিষ্কার আর ঝলমলে!
Written by Manisha Dasgupta on 24th Nov 2020