রাতে দিব্যি ঘুমিয়েছিলেন! সকালে উঠে দেখলেন গালের ওপরে টপ করে গজিয়ে উঠেছে লাল রঙের রাগী রাগী মুখের একটা বড়সড় ব্রণ! সত্যি বলতে কৈশোরকাল কাটিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যাওয়ার পরেও ব্রণর সমস্যা যেন কাটতেই চায় না! ব্রণ কমানো আর তার পরে ব্রণর দাগ কমানোর লড়াইটাও তাই চলতেই থাকে।
আমাদের বেশিরভাগ মেয়েদের ক্ষেত্রেই ব্রণ হয় বটে, আবার কমেও যায়, আর মাঝেমধ্যে কোনও দাগও থাকে না। কিন্তু কখনও কখনও এমন ব্রণ হয় যাতে ব্যথা তো থাকেই, এমনকী চারপাশের জায়গাটা লাল হয়ে থাকে! আপনারও যদি এমন ব্রণ হয়ে থাকে, তা হলে খুব সম্ভবত তার জন্য দায়ী হরমোনগত কারণ।

হরমোনজনিত ব্রণ কী আর কেন হয়?
নাম থেকেই বুঝতে পারছেন, হরমোনজনিত ব্রণর পিছনে থাকে হরমোনের মাত্রার তারতম্য। এ ধরনের ব্রণ বয়ঃসন্ধির মেয়েদের মধ্যে নয়, বরং অনেক বেশি দেখা যায় প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে। ঋতুবন্ধ বা মেনোপজের সময়, গর্ভাবস্থায় এবং ঋতুচক্রের সময় আপনার হরমোনের মাত্রায় তারতম্য দেখা দিতে পারে যার ফলে হরমোনজনিত ব্রণ বেরোয়। এ ছাড়া হরমোনজনিত ব্রণর কারণ হিসেবে মানসিক চাপ, রাসায়নিক দেওয়া স্কিনকেয়ার প্রডাক্ট যা রোমছিদ্রের মুখ বন্ধ করে দেয় এবং কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কারণ হিসেবে থাকতে পারে।
হরমোনজনিত ব্রণর সবচেয়ে বড় লক্ষণ হল সিস্ট আর ত্বকের নিচে ফোলাভাব। বয়ঃসন্ধির সময় হরমোনজনিত ব্রণ সাধারণত মুখের টি-জোন অর্থাৎ কপাল, নাক আর চিবুকেই বেরোয়। পরিণত বয়সে এই ব্রণ বেরোয় গালের নিচের অংশে, চিবুকে আর জ লাইন অর্থাৎ চোয়ালের কাছে।
খাদ্যাভ্যাস কি হরমোনজনিত ব্রণর জন্য দায়ী?
হরমোনজনিত ব্রণর জন্য খাদ্যাভ্যাস সরাসরি দায়ী না হলেও কিছু কিছু খাবারের কারণে হরমোনজনিত ব্রণ বেড়ে যেতে পারে। রোজকার খাবারে ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকলে তা সেবাম উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় এবং তা থেকে ব্রণ হতে পারে। হরমোনজনিত ব্রণ কমিয়ে ত্বক সুস্থ রাখতে চাইলে পরিশোধিত দানাশস্যজাত খাবার অর্থাৎ পাস্তা, সিরিয়েল ও পাউরুটি খাওয়া কমিয়ে দিন। কার্বোনেটেড পানীয়, মিষ্টি, দুধ ও চিজের মতো দুধ থেকে তৈরি খাবার খাওয়া চলবে না। বাদ দিতে হবে বার্গার, পেস্ট্রি, সসেজের মতো ফাস্ট ফুড। ছাঁটাইয়ের তালিকায় রয়েছে ডার্ক চকোলেটও।

হরমোনজনিত ব্রণ কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি, রেটিনয়েড, অ্যান্টি-অ্যান্ড্রোজেন ওষুধ, বেনজয়েল পারঅক্সাইড দিয়ে হরমোনঘটিত ব্রণর চিকিৎসা করা যায়। তা ছাড়া ব্রণ কমিয়ে ত্বকের অবস্থা ভালো করার জন্য কিছু প্রাকৃতিক উপায়ও আছে। টি ট্রি অয়েল আর গ্রিন টি হরমোনঘটিত ব্রণ কমাতে দারুণ ভালো কাজ করে।
টি ট্রি অয়েলের প্রদাহ কমানোর গুণ রয়েছে। ব্রণর উপরে লাগালে তা ব্রণ কমিয়ে দিতে পারে। ব্রণর প্রকোপ খুব বেশি না হলে উপকার পাবেন। অন্যদিকে গ্রিন টি-তে পলিফেনল রয়েছে যা সেবাম উৎপাদন কমিয়ে ব্রণ সারাতে সক্ষম।
Written by Team BB on 9th Jul 2020