উইকএন্ডের জন্য অন্তহীন প্রতীক্ষা থাকে নানা কারণে! প্রথমত, সারা সপ্তাহের বিপুল কাজের চাপ থেকে মুক্তি মেলে উইকএন্ডে, ফলে ব্রাঞ্চডেটে যাওয়ার সুযোগ মেলে। ইচ্ছে করলে কোথাও টুক করে স্টেকেশনেও চলে যাওয়া যায়... এ তালিকা দীর্ঘ! কিন্তু আপনি যদি আমাদের মতো চুলের যত্নের পেছনে সময় দিতে অভ্যস্ত হন, তা হলে আপনার উইকএন্ড মানেই বাড়িতে বসে একটা গুছিয়ে বড় করে হেয়ার স্পা।
ঘরোয়া হেয়ার মাস্ক, স্ক্যাল্প মাসাজ, বাথরুমে হালকা মিউজিক, আরও কত কী! চুলের যত্ন নেওয়ার আদর্শ সময় হল উইকএন্ড। আর আপনি যদি চুলের আদর্শ যত্নের রুটিন চান, তা হলে একদম ঠিক জায়গায় এসেছেন। চোখ বুলিয়ে নিন সাতটি ধাপের হেয়ার কেয়ার রুটিনে আর উইকএন্ডে চুল করে তুলুন রেশমের মতো নরম আর মসৃণ।
- ধাপ#1: হেয়ার অয়েল
- ধাপ#2: স্টিম
- ধাপ#3: শ্যাম্পু
- ধাপ#4: ঘরোয়া হেয়ার মাস্ক
- ধাপ#5: কন্ডিশন
- ধাপ#6: সিরাম
- ধাপ#7: চুল শুকিয়ে নিন খোলা হাওয়ায়
ধাপ#1: হেয়ার অয়েল

উইকএন্ড হেয়ার কেয়ারের একটি জরুরি ধাপ হল চুলে তেল মাখা, যাতে হারানো আর্দ্রতা ফিরে আসে, চুলের রুক্ষতা কমে এবং কিউটিকলের ক্ষতি মেরামত হয়ে যায়। তাই অন্য হেয়ার কেয়ার প্রডাক্ট ব্যবহারের আগে পছন্দের হেয়ার অয়েল নিন, কয়েক মিনিট গরম করুন, তারপর স্ক্যাল্পে আর পুরো চুলে ভালো করে মেখে নিন। হালকা হাতে ধীরে ধীরে স্ক্যাল্প মাসাজ করুন, যাতে রক্ত সংবহন উন্নত হয়ে চুলের বৃদ্ধি ঘটে। চুলে তেল মেখে দু'-এক ঘণ্টা রেখে দিন।
ধাপ#2: স্টিম

স্টিমিং চুলের কিউটিকল খুলে দেয়, ফলে তেল স্ক্যাল্পের গভীরে প্রবেশ করে সর্বোচ্চ আর্দ্রতা জোগাতে পারে। এর ফলে রক্ত সংবহনও ভালো হয়, সুস্থ চুলের বৃদ্ধি ঘটে। আপনার মিনি স্টিমার না থাকলে হট টাওয়েল ট্রিটমেন্ট নিন। নরম তোয়ালে এক গামলা গরম জলে ডুবিয়ে ভালো করে নিংড়ে নিন। দেখবেন ছ্যাঁকা খাওয়ার মতো গরম যেন না হয়। তারপর গরমভাব কমার আগেই ভেজা তোয়ালেটা মাথায় জড়িয়ে নিন। 10 মিনিট রেখে খুলে নিন। এরকম আরও দু'বার করুন।
ধাপ#3: শ্যাম্পু

এবার তেল ধুয়ে ফেলার পালা। লাভ বিউটি অ্যান্ড প্ল্যানেট আর্গান অয়েল অ্যান্ড ল্যাভেন্ডার অ্যারোমা শ্যাম্পু/ Love Beauty & Planet Argan Oil & Lavender Aroma Shampoo-র মতো কোমল শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এতে প্যারাবেন, সিলিকন বা কোনও কড়া কেমিক্যাল নেই। ময়শ্চারাইজিং গুণসম্পন্ন মরোক্কান আর্গান অয়েল, অর্গানিক কোকোনাট অয়েল আর হাতে তোলা ফরাসি ল্যাভেন্ডার যুক্ত এই শ্যাম্পুটি আপনার চুলের কাছে এক গেলাস সুস্বাদু তরতাজা সরবতের মতো! আর হ্যাঁ, এই শ্যাম্পুটি দিয়ে চুল দারুণ পরিষ্কার হয়, রুক্ষতা কমে চুল মসৃণ হয়ে ওঠে, ফলে সামলানো সহজ হয়।
ধাপ#4: ঘরোয়া হেয়ার মাস্ক

এবার ঘরোয়া হেয়ার মাস্ক দিয়ে চুলের যত্ন করা দরকার। সপ্তাহে একদিন মাস্কিং করার পরামর্শ দেওয়া হয় কারণ তাতে চুল ভেতর থেকে পুষ্টি পায়, উজ্জ্বল ঝলমলে হয়ে ওঠে। তা ছাড়া রুক্ষতা কমে চুল মজবুত আর চকচকে দেখায়। দু' টেবিলচামচ অ্যালো ভেরার সঙ্গে দু' টেবিলচামচ টক দই আর এক চাচামচ দারচিনির গুঁড়ো মেশান। এই মিশ্রণটা চুলে আর স্ক্যাল্পে লাগিয়ে কোমল হাতে 5-10 মিনিট মাসাজ করুন। এবার খোলা হাওয়ায় শুকোতে দিন, মিনিট পনেরো পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ইচ্ছে করলে সমস্ত অবশেষ ধুয়ে ফেলতে অল্প শ্যাম্পু লাগাতে পারেন। এর উপকারিতা জানতে চান? অ্যালো ভেরা চুলে আর্দ্রতা ধরে রাখে, দারচিনি ছত্রাকের আক্রমণ কমায় আর টকদই খুসকি আর স্ক্যাল্পের চুলকানির মোকাবিলা করে।
ধাপ#5: কন্ডিশন

শ্যাম্পুর পর চুলে কন্ডিশনার মাখতেই হবে। কন্ডিশনার চুলে আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং চুল সামাল দেওয়া সহজ হয়। লাভ বিউটি অ্যান্ড প্ল্যানেট আর্গান অয়েল অ্যান্ড ল্যাভেন্ডার অ্যারোমা কন্ডিশনার/ Love Beauty & Planet Argan Oil & Lavender Aroma Conditioner দিয়ে চুলে পুষ্টি জোগান। মরোক্কান আর্গান অয়েল এবং অর্গানিক কোকোনাট অয়েল দিয়ে তৈরি এই কন্ডিশনারটি চুলে আর্দ্রতা ফেরায়, চুল নরম আর মসৃণ হয়ে ওঠে। চুলের মাঝবরাবর অংশ থেকে শেষভাগ পর্যন্ত (স্ক্যাল্পে লাগাবেন না) কন্ডিশনার লাগান। 3-4 মিনিট রেখে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। স্টিমিংয়ের সময় খুলে যাওয়া কিউটিকল আবার বন্ধ করে দিতে সাহায্য করে ঠান্ডা জল।
ধাপ#6: সিরাম

আর্দ্রতা চুলের গভীরে ধরে রাখতে সিরাম লাগান। লিভ-ইন সিরাম বা আর্গান অয়েল মেখে নিন চুলে। সিরামের সক্রিয় উপাদান আপনার চুলের রুক্ষতা কমিয়ে চুল ঝলমলে করে তোলে, চুল বশে থাকে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখবেন একটুতেই কাজ হবে। কয়েক ফোঁটা সিরাম হাতের তালুতে ঘষে চুলের মাঝবরাবর অংশ থেকে শেষভাগ পর্যন্ত মেখে নিন।
ধাপ#7: চুল শুকিয়ে নিন খোলা হাওয়ায়

সপ্তাহের কাজের দিনগুলোয় ব্লো ড্রাই করলেও সপ্তাহান্তের ব্যাপারটা আলাদা। খোলা বাতাসে চুল শুকোন, তারপর যাতে চুল কম ওঠে, সেজন্য মোটা দাঁড়ার চিরুনি দিয়ে জট ছাড়িয়ে নিন।
Written by Manisha Dasgupta on 1st Oct 2021