আমাদের চুল ধোওয়ার রুটিন বেশ সোজাসাপটা: চুলের জট ছাড়ানো, শ্যাম্পু লাগিয়ে ধুয়ে ফেলা, তারপর পরিমাণমতো কন্ডিশনার নিয়ে চুলের দৈর্ঘ্য বরাবর লাগানো। ব্যস, শেষ! কিন্তু সত্যিই শেষ কি? একটু ভেবে দেখা যাক। ধরুন আপনি শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে চুল ভেজালেন, তারপর কন্ডিশনার নিয়ে চুলের প্রান্তভাগে ভালো করে মেখে নিলেন, তারপর শ্যাম্পু দিয়ে বাকি চুল ধোওয়ার কাজ শুরু হল! তফাতটা কি ধরতে পারলেন? হ্যাঁ, চুল ধোওয়ার রুটিনটা উলটে দিলাম আমরা। চুল ধোওয়ার নতুন পদ্ধতি এটাই। একে বলা হয় 'রিভার্স ওয়াশিং'। শ্যাম্পু দিয়ে শুরু করে কন্ডিশনারে শেষ করার যে চিরাচরিত পদ্ধতি, এটি তার থেকে আলাদা। কিন্তু এই পদ্ধতি নিয়ে এত মাতামাতি কেন, আর কেনই বা আমরা পদ্ধতিটি নিয়ে এত পরীক্ষানিরীক্ষা করছি, প্রশ্ন এটাই!
- 01. চুল ধোওয়ার রুটিন পালটে দেব? কিন্তু কেন?
- 02. কীভাবে এই পদ্ধতি মেনে চলবেন?
- 03. রিভার্স ওয়াশিং কাদের করা উচিত?
01. চুল ধোওয়ার রুটিন পালটে দেব? কিন্তু কেন?

কন্ডিশনারের আগে চুলে শ্যাম্পু করলে একদিকে যেমন চুল পরিষ্কার হয়, স্ক্যাল্প থেকে তেলময়লা ঘাম ধুয়ে যায়, তেমনি চুলের স্বাভাবিক তেলের আস্তরণও নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চুল থেকে আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে গিয়ে চুল শুষ্ক হয়ে যায়। আর্দ্রতার এই অভাব পূরণ করতে আমরা আবার চুলের দৈর্ঘ্য বরাবর কন্ডিশনার লাগাই। ব্যাপারটা কেমন পরস্পরবিরোধী মনে হচ্ছে না? চুল এভাবে ধুলে যদি তা শুষ্ক, নিষ্প্রাণ হয়ে নেতিয়ে পড়ে, তা হলে সেভাবে ধুয়ে লাভ কী? অন্যদিকে শ্যাম্পু করার আগে কন্ডিশন লাগালে চুলের কিউটিকল যথাযথ পুষ্টি পায়। এতে কন্ডিশনার চুলের ওপরে একটা সুরক্ষার আস্তরণ তৈরি করে, ফলে শ্যাম্পু চুলের স্বাভাবিক তেলের আবরণ ভেঙে দিতে পারে না। আগে কন্ডিশনার লাগালে কিউটিকলও বেশি করে আর্দ্রতা শুষে নিতে পারে। অন্যভাবে বললে আপনার চুল গভীর আর্দ্রতা পায়। এই নিয়ম মানলে ঝলমলে, নরম, সুস্থ চুল পাওয়া নেহাত অসম্ভব নয়, তাই না? আর পরে শ্যাম্পু করছেন মানে কন্ডিশনারের ছিটেফোঁটাও আর চুলে লেগে থাকবে না। আপনার চুল যে ন্যাতানো দেখায়, তার মূলে রয়েছে এই কন্ডিশনারের অবশেষ! কন্ডিশনার শুধু জলে না ধুয়ে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেললে চুল ভালোভাবে পরিষ্কার হয়ে যায়। ফলে চট করে চুল তেলতেলে হয় না।
02. কীভাবে এই পদ্ধতি মেনে চলবেন?

ব্যাপারটা বেশ সহজ! প্রথমে চুল ভালো করে ভিজিয়ে নিন। তারপর ট্রেসমে কেরাটিন স্মুদ কন্ডিশনার/ TRESemmé Keratin Smooth Conditioner-এর মতো আর্গান অয়েল যুক্ত কন্ডিশনার বেশি করে নিয়ে চুলের শেষভাগ থেকে শুরু করে মাঝবরাবর মাখিয়ে নিন। এবার 20 মিনিট রাখুন, তারপর জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর ট্রেসমে কেরাটিন স্মুদ শ্যাম্পু/ TRESemmé Keratin Smooth Shampoo দিয়ে চুল খুব ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিবার চুল ধোওয়ার সময় এই পদ্ধতিতেই ধুতে পারেন। অথবা চুলে হালকা টেক্সচার চাইলেও এই পদ্ধতিতে ধোওয়া যায়।
03. রিভার্স ওয়াশিং কাদের করা উচিত?

আপনার যদি শুষ্ক, পাতলা, অথবা তেলতেলে, ন্যাতানো চুল হয়, তা হলে এই পদ্ধতিতে চুল ধুতে পারেন। কিন্তু আপনার চুল যদি ঘন আর রুক্ষ প্রকৃতির হয়, তা হলে এই কৌশলে চুল ধোওয়া থেকে দূরে থাকুন। মনে রাখবেন, শ্যাম্পুর পিএইচ খুব বেশি এবং তা চুলের কিউটিকলকে ফাঁপিয়ে দেয় (কিউটিকল ফেঁপে ফুলে গেলে চুল ঘন দেখায়, যা পাতলা চুলের অধিকারীদের জন্যই আদর্শ)।
Written by Manisha Dasgupta on 25th Feb 2022